কক্সবাজারের পেকুয়া মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী শারমিন সোলতানা শিউলি নামক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক এছারুল হক ও তার ছোট ভাই রুবেলের বিরুদ্ধে। প্রাপ্ত সুত্র জানায়, স্কুল ছাত্রী শারমিন সোলতানা শিউলি মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী হিসেবে সরকার থেকে প্রদত্ত উপবৃত্তির টাকা পেয়ে থাকে। সরকার শিক্ষার্থীদের অনুকুলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দেন। সেই হিসেবে শারমিন সোলতানা শিউলিরও মুঠোফোনে টাকা পৌছানোর কথা। কিন্তু নিবন্ধনের সময় মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক এছারুল হক ও সালাহ উদ্দিন দুই জনই ওই স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে সীম নিবন্ধনের দায়িত্ব পান।
ওই সুযোগে শিক্ষক এছারুল হক শিক্ষার্থী শিউলির নামে সীম বিকাশে নিবন্ধন না করে তার ছোট ভাই একই স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক রুবেলের নামের বিকাশের সীমে নিবন্ধন করে।এক বছরের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করে এছারুল হক ও তার ছোট ভাই শিক্ষক রুবেল। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিকাশে সীম নিবন্ধনের সময়ে শিউলির উপবৃত্তির টাকা পেতে তার পরিবার থেকে ০১৮৮৩-৭৮৩০৩৭ সীম নাম্বার স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়েছিলেন।পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক এছারুল হক ওই ছাত্রীর বিকাশ নাম্বার না দিয়ে তার ছোট ভাই একই স্কুলের শিক্ষক রুবেলের নাম্বার( ০১৮৭৯-৩৪২৯৬৪) দিয়ে শিক্ষার্থী পুরো টাকা আত্মসাৎ করে।
সেই সময় থেকে শিউলির ওই উপবৃত্তির টাকাগুলি রুবেলই উত্তোলন করে। এ দিকে উপবৃত্তির টাকা না পেয়ে নিয়ে শিক্ষক এছারুল হক ও ছাত্রী শিউলির পরিবারের মধ্যে হট্টগোল দেখা দিয়েছে। টাকা না পাওয়ার বিষয়টি শিক্ষক এছারুল হককে জানানো হয়েছিল। এর সুত্র ধরে এছারুল হক ও তার ভাই রুবেলসহ আরো কয়েকজন মিলে ছাত্রী শিউলির আফিয়া বেগমকে হেনস্থাও করে। এ ব্যাপারে ছাত্রী শিউলির মা আফিয়া বেগম জানান, আমার মেয়ে প্রতারিত হয়েছে। এছারুল ও রুবেল আমার ভাসুরের ছেলে। আমি সীম দিয়েছি আমাদের ব্যক্তিগত। তারা আমাদের নাম্বারটি বিকাশে না দিয়ে নিজের সীমের নাম্বার দিয়েছে। তারা মূলত আমার ছোট্ট শিশুর টাকা মেরে দিতে এমন করেছে। আমি এ নিয়ে কথা বলছিলাম। তারা ২ ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িতে এসে আমাকে অপমান করে। হেনস্থা করা হয়েছে আমাকে।
একটি সুত্র জানান, উপবৃত্তি টাকা নিয়ে মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ে নয় ছয় হয়েছে। সরকারী টাকা আত্মসাত হয়েছে ওই স্কুল থেকে। প্রধান শিক্ষকসহ একটি চক্র ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করার অহরহ অভিযোগ রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর টাকা আত্মসাত করতে তারা ছাত্র-ছাত্রীদের নাম সীমে নিবন্ধন না করে নিজেরা মুঠোফোন নাম্বার দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে প্রেরিত টাকা আত্মসাত করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আক্তার আহমদ জানান, তারা দুই জন সীম নিবন্ধনের সময় দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এছারুল হক ও সালাহ উদ্দিনকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আসলে এছারুল হক নিবন্ধিত সীমে ছাত্রীর পরিবর্তে তার ভাইয়ের নাম্বারটি নিবন্ধন করিয়ে ফেলে।
ছাত্রীর মা আফিয়া বেগম আরো জানান, বিষয়টি এক বছর পর্যন্ত অস্পষ্ট ছিল। খাতা চেক করার সময় ধরা পড়ে রুবেলের নাম্বারটি বিকাশে নিবন্ধিত হয়েছে। সব শিক্ষার্থীরা টাকা পাই। আমার মেয়ে কেন টাকা পাচ্ছে না। এ প্রশ্নে আমার অনুসন্ধানে সেটি ধরা পড়ে। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাছেম বিল্যাহ জানান, বিষয়টি আমাকেও জানানো হয়েছে। আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।