টাঙ্গাইল সখিপুর উপজেলাতে ঘরোয়া ভাবে শালিসি বৈঠক শেষে সোমা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূ শরীরে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১২ জানুয়ারী) ভোর রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় তার স্বজনরা। উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামে ওই গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত সোমা আক্তার ওই এলাকার এরশাদ মিয়ার স্ত্রী।
তবে আত্মহত্যা নয় আগুন জ্বালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন নিহত সোমার মা পারভীন আক্তার। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করে নাই বলে জানিয়েছে সখিপুর থানা পুলিশ।এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিকভাবে বনাবনি না হওয়ায় গত শনিবার (৮ জানুয়ারী) দুপুরে এরশাদের বাড়িতে একটি শালিসি বৈঠক হয়। তার কিছুক্ষণ পর বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে সোমা নিজেই শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনার ৪ দিন পর চিকিৎসারত অবস্থায় সে মারা যায়।
ওই এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানায়, মেয়েটা নিজেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি তখন ওই বাড়ির রান্না ঘরের পাশে ছিলাম। শালিসি বৈঠকের কথা জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন আমি ঢাকায় যাচ্ছি। সন্ধ্যায় সব বলবো বলে ফোন কেটে দেয়। মেয়ের মা পারভীন আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে আগুন দিয়ে পুড়ার সময় মেয়ে কাইন্দ্যা কাইন্দ্যা কইছে আমারে বাঁচাও, কেউ এক কলসি পানি নিয়ে আসো। কিন্তু কেউ পানি নিয়ে এগিয়ে আসে নাই। এর আগেও আমার মেয়েকে লোহার প্যারাক (রড) দিয়ে শ্যাক দিতো। কত কইছি তোরে নিয়া যামুগা, আমার ম্যায়ায় (মেয়ে) কইছে একটা বাচ্ছা হইছে, আমি এখান থেকে যামুনা। কিন্তু পাশান স্বামী, শ্বশুর মিলে আমার মেয়েকে আগুন ধরিয়ে পুইড়া মারছে। আমি এর বিচার চাই।
মেয়ের মা পারভীন আক্তার আরও জানায়, প্রায় চার বছর আগে মির্জাপুর উপজেলার গয়রামপুর গ্রামের নইমুদ্দিনের মেয়ে সোমা আক্তারের সাথে সখিপুর উপজেলার বোয়ালীা পশ্চিমপাড়া এলাকায় সোমেশ আলীর ছেলে এরশাদ মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। এর আগেও এরশাদ একটি বিয়ে করেছিলেন। আর এ ঘটনা আমরা বিয়ে পরে জানি। সেই ঘরে একটি ১৫ বছরের মেয়ে আছে। সেই সংসার নিয়েও মামলা চলছে।
সখিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল হক ভূ্ইঁয়া বলেন, আগুনে পুড়ে এক গৃহ বধূর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি কিন্তু কেউ থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ করেনি।