কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের চার মাস পর যৌতুকের দাবীতে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার নাথেরপেটুয়া ভূঁইয়াবাড়ি এলাকায় স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর বাবা-মা ও স্বজনদের দাবি, বিয়ের চার মাস পর বিদেশে যাওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্মম নির্যাতন করে তামান্না আক্তারকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তামান্নার স্বামী শরিফুল ইসলামা রাশেদ, বাবা অহিদুল ইসলাম তার মা রোকেয়া বেগম ও বড়ভাই রাকিব, ছোট বোন পলাতক রয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। নিহত গৃহবধূর নাম তামান্না আক্তার কনা (২১)। তিনি লাকসাম পৌরশহরে নরশতপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়াবাড়ি এলাকার অহিদুল ইসলামের ছেলে রাজমিস্ত্রি রাশেদর সঙ্গে তামান্না আক্তার কনার চার মাস আগে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তামান্না। গত কয়েক দিন আগে সৌদি আরব যাওয়ার কথা বলেন স্বামী রাশেদ তামান্নাকে বাপের বাড়ির থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেন স্বামী ও তার শ্বশুর-শাশুড়ি।
গৃহবধূ তামান্না সেই দাবির কথা তার হতদরিদ্র বাবা-মাকে অবগত করেন। এর পর বাবা-মা তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ৭০ হাজার টাকা দেবে বলে আশ্বাস দেন। গত দুদিন আগে স্বামীকে নিয়ে তামান্না বাবার বাড়িতে গেলে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর একদিন পর বাকি টাকা পাবে বলে আশ্বাস নিয়ে রোববার তারা ফিরে যান।
পরে দুই লাখ টাকা না আনায় স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে গৃহবধূ তামান্নার কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে আহত হন৷ আশপাশের লোকজন আহতাবস্থায় গৃহবধূকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে কর্মরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে কুমিল্লা হাসপাতালে কনা মারা যান।
এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ থানায় শরিফুল ইসলাম রাশেদ (২২), রাকিব (২৫) ও রোকেয়া বেগম (৪৫), তিন জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়৷ এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ থানায় ওসি মাহবুবুল কবির বলেন, অভিযোগ সূত্রে দুজন পুলিশের হেফাজতে আছে৷ মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ রির্পোট পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷