চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ ইউনিয়নের চেংঙ্গাতলী বাজারে কালভার্ট সহ সরকারি খাল ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কৃষি জমি রক্ষার্থে ওই গ্রামের একাধিক কৃষক গণস্বাক্ষর করে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
জানাযায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ ইউনিয়নের চেঙ্গাতলী বাজার সংলগ্ন দেওদ্রোন গ্রামের মতলব-চৌমুহনী (বজরী খাল) খালের পাশে অবস্থিত প্রায় ২,শ একর কৃষি জমির মধ্যে দুই আড়াই,শ কৃষক পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ আলু, ধান, গম, ভুইট্টসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছেন। কৃষকরা এইসব ফসল চাষ করতে গিয়ে জমিতে পানি ব্যবহার এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য এই খালটি ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে পাশ্ববর্তী গ্রামের শাহাজাহান হজি নামে এক ব্যক্তি চেংগাতলী বাজারের পাশে থাকা কালভার্ট সহ সরকারি ওই খালটি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেন। যার কারণে কৃষকরা এবার ফসল আবাদ করতে না পেরে অনেক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ফসলি জমি রক্ষার প্রতিবাদে ওই এলকার ভুক্তভোগী একাধিক কৃষক সাদা কাগজে গণস্বাক্ষর করে চাঁদপুর মোকাম বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চেংগাতলী বাজারসংলগ্ন দেওদ্রোন গ্রামে অবস্থিত মতলব-চৌমুহনী (বাজরী) খালটির পানি নিষ্কাশনের মূল কালভার্টের অভিমুখ সহ বিশাল জায়গা জুড়ে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মানের জন্য ‘স, মিল মেশিন বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু ভুক্তভোগী কৃষকদের ক্ষতির কথা চিন্তা না করেই প্রভাবশালী শাহজাহান হজি নিজের ইচ্ছেমত সরকারি খালটি ভরাট করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি চাষ রক্ষায় আদালতে মামলার পাশাপাশি গত কয়েকদিন পূর্বে ভুক্তভোগী একাধিক কৃষকরা ওই এলাকায় মানববন্ধন করেছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলার দ্বাদশ ইউনিয়নের দেওদ্রোন গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষক, হানিফ বকাউল, বোরহান উদ্দিন, রাসেল হোসেন, মাসুম হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, লেয়াকত আলী, মহসিন, ইসমাইল, হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর সহ একাধিক কৃষক জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মতলব চৌমহনী খালের পাশে থাকা কৃষি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে আলু, ধান, ভুইট্টা,গমসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছি। এসব ফসল চাষ করতে গিয়ে আমরা আমাদের কৃষি জমিতে পানি উত্তোলন এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য এই খালটিই ব্যবহার করতাম। কিন্তু শাহাজাহান হজি কালভার্টসহ সরকারি এই খালটি বালু দিয়ে ভরাট করার কারনে আমরা সব কৃষকরা অনেক বিপাকে পড়েছি। শুধু কৃষি জমির জন্যই খালটি ব্যবহার করা হয়নি। এর পাশাপাশি আমাদের এলাকার আশে পাশের কয়েকটি গ্রামের বৃষ্টির পানি এবং বন্যার পানি নিষ্কাশনের জন্য এটি আমাদের একমাত্র ভরসা ছিলো।
এ বছর আলু সহ বিভিন্ন ফসল জমিতে চাষ করার স্বপ্ন থাকলেও খালটি ভরাট করার কারণে আমরা এবার অনেক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। তারা জানান এর পূর্বেও উল্লেখিত খালটির বিভিন্ন স্থানে ওই গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে জসিম বেপারী, মৃত আমিন উদ্দিন প্রধানীয়ার ছেলে জামাল প্রধানীয়াসহ আরো কয়েকজন মিলে খালটিতে বালু ফেলে ভরাট করেছেন। সর্বশেষ এখন শাহাজাহান হজি, খালটির পানি নিষ্কাশনের মূল কালভার্টের মুখসহ বালু দিয়ে ভরাট করে ‘স, মিল দিয়ে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আমাদের কৃষি জমি রক্ষার জন্য সরকারি খালটি রক্ষায় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে খালভরাটকারী অভিযুক্ত শাহাজাহান হজির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার এখানে কোন খাল নাই। আমার সব দিক বন্ধ, আমি কি করবো এখন। তিনি বলেন, আমার উত্তর দক্ষিণ সবদিকেই অনেকে বিল্ডিং করেছেন তাই কালভার্টের মুখসহ জমি ভরাট করা হয়েছে। তারপরেও এখন যদি সবাই খালের জায়গা দেয় কিংবা সরকার চায় তাহলে আমিও তা দিবো।