জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশের মতো শুক্রবার (৫ নভেম্বর) ভোর থেকে কুমিল্লায় বাস-ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দূর পাল্লার যাত্রীরা। নগরীর জাঙ্গালিয়া ও শাসনগাছা বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস না পেয়ে অনেক যাত্রী ছুটছেন রেল স্টেশনে । শুক্রবার ছুটিদিন থাকার সেখানে গিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন অনেকেই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ ট্রাক-বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে বাস-ট্রাক ধর্মঘটের কারণে কুমিল্লায় প্রায় ১৫ টি রুটের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। জরুরি কাজে যাদের কুমিল্লা থেকে ঢাকায় যাওয়ার কথা, তারা সকালে নগরীর বিশ্বরোড এলাকায় (পদুয়ার বাজার ) বাস টার্মিনালে গিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এছাড়া বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থী ও সরকারি চাকরি প্রার্থীরা। হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘটে ক্ষুব্ধ তারা।
জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চাকরি পরীক্ষার্থী সোহেল মজুমদার নামের এক যাত্রী বলেন, আজ (শুক্রবার) সকালে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। শনিবার সকাল ৮ টায় আমার চাকুরী পরীক্ষা, অথচ আমি যেতে পারছি না, বাস ধর্মঘটের কারণে আমাকে বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে।হঠাৎ এমন সিন্তাদ্ধ আমার ক্ষতি হয়ে গেলো। শুধু বাস-ট্রাকের মালিকদের দোষ দিয়ে কী হবে? ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাসের দাম বাড়ালে তার সব ভার পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। তার পরও, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় করা ঠিক নয়।
বাস বন্ধ থাকায় রেলস্টেশনে টিকিটের জন্য এসেছেন নগরীর চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রহমান। তিনি বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখেন বাস বন্ধ। রেল স্টেশনে এলাম টিকিটের জন্য।এখানে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষার পর টিকিট পায়নি। এদিকে ভোর থেকে কুমিল্লার বাস টার্মিনালগুলো থেকে কোন রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। আগে থেকে বুকিং থাকায় কিছু কিছু ট্রাক কাভার্ডভ্যান চললেও নতুন ভাড়ায় কেউ নিচ্ছে না পণ্য পরিবহনও। ভোর থেকে কুমিল্লায় নগরীর জাঙ্গালিয়া,শাসনগাছা, পদুয়ার বাজার বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামগামী দূরপাল্লার চলাচলকারী বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। অনেক মানুষ এসে বাস চলাচল সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু কাউন্টারে কেউ না থাকায় বাস চলাচল কখন শুরু হবে, কেউ তা বলতে পারছেন না।
শুক্রবার সকাল থেকে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় থেকে কোনো অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। এ সুযোগে মাহিন্দ্র, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাসসহ ছোট গাড়িগুলোতে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। ফলে যাত্রীদের কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
সানজিদা আক্তার নামে ভুক্তভোগী এক যাত্রী জানান, ‘সকালে গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাকে চান্দিনা থেকে ফেনী যেতে হয়েছে । প্রতিদিন বাসে চান্দিনা থেকে ফেনী আসতে যেখানে ৮০-৯০ টাকা খরচ হতো, আজ মাইক্রোবাস গুনতে হয়েছে ৫ গুণ ভাড়া বেশি। ৫০০ টাকা দিয়ে অনেক কষ্টে ফেনীতে এসেছি। এখন যাওয়ার পথে সন্ধ্যায় কিভাবে যাবে আল্লাহ জানে।এবিষয় জানতে
কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, ধর্মঘটের বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও কোনো মালিক বাস না চালালে তাকে বাধ্য করা হবে না। তবে আমরা কাউকে বাধ্যও করছি না গাড়ি না নামাতে। আমরা আশা করি সরকার আমাদের দাবি মেনে নিবে।