অনলাইন রিপোর্ট: কুমিল্লায় পাহাড় কাটার অভিযোগে ’পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করায় পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালককে হুমকি দিয়েছেন (কুমিল্লা-৬) সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। এমপি বাহার নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে উপ-পরিচালক শওকত আরা কলিকে ১৫ দিনের মধ্যে কুমিল্লা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দেন। এর আগে উপ-পরিচালককে ফোনে ’ননসেন্স’ বলে গালি দেন এমপি বাহার। কল রেকর্ডে তিনি বলেন, ’কুমিল্লায় থাইকা ক্ষমতার অপব্যবহার করার কোনো সুযোগ নাই। আমার ভালোটা দেখছেন আপনে, খারাপটা তো দেখেন নাই। এরপর তিনি বলেন, খুব ক্ষমতা না আপনার?… আপনার অফিসে গিয়ে তালা মেরে দেব! ২ মিনিট ১৩ সেসেন্ডের এই কথোপকথন রেকর্ড । জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তা বর্ধিতকরণের একটি প্রকল্পে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৩০ ঘনফুট মাটি কাটার অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড ও মেসার্স হক এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। কিন্তু পাহাড় কাটার কোনো অনুমতি নেয়নি এই দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগও তাদের পাহাড় কাটার বিষয়টি জানা নেই বলে পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানায়। এ জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্রগ্রাম অঞ্চলে প্রতিবেদন পাঠান কুমিল্লার উপ-পরিচালক। এই প্রতিবেদনটি হাতে পেয়ে উপ-পরিচালককে ফোন করেন এমপি বাহার। কথার একপার্যায়ে উপ-পরিচালক ১০ মিটিটের মধ্যে তার অফিসে আসার নির্দেশ দেন। কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিছুক্ষণ পর সহকারী পরিচালক ও পরিদর্শককে নিয়ে এমপি বাহারের অফিসে যান। সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকদের সামনে ফের খারাপ ব্যবহার করেন এমপি বাহার।
এ বিষয়ে কোনো বন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি। তিনি বলেন, যা হয়েছে থাক। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্রগ্রামের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, একজন আইনপ্রণেতা হয়ে এমপি বাহাউদ্দিন বাহার যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। পরিবেশ অধিদপ্তর যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে, তাহলে এই অধিদপ্তর রেখে লাভ কি?
জানতে চাইলে, দুর্ব্যবহারের বিষয়টি শিকার করেন এমপি বাহার। তিনি বলেন উপ-পরিচালন টাকা-পয়সা না পেয়ে মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এমপি বাহার দাবি করেন, উপ-পরিচালক উল্টাপাল্টা রিপোর্ট দিয়েছে। সে ভূল স্বীকার করেছেন। অফিসে তালা মেরে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। ১৫ দিনের মধ্যে কুমিল্লা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, আমার সাথে ডিডির কথা হয়েছে।