হৃদয় এস সরকার: নরসিংদীর রায়পুরা আমিরগঞ্জে ১০ টাকা কেজি সরকারি চালচুরি বিষয়ে নিউজ করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা এস এ টিভির নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি সজল ভূইয়াকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৭ এপ্রিল) আহত সাংবাদিক নিজে বাদী হয়ে চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২০ জনকে আসামী করে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬ টার রায়পুরার আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনাটি ঘটে।
আহত সাংবাদিক জানান, সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল চুরি, চাল বিক্রয় ও কার্ডধারী সুবিধাভূগীদের নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে আসা এশিয়ান টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার বাতেন বিপ্লব নরসিংদীতে আসে।ঐ রিপোর্টার তার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করছিলেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে চার চুরির অভিযোগে ওই রিপোর্টার আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎকার নিতে পৌছলে এসময় আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বাশার, সাধারণ সম্পাদক শরীফ ও রুবেল, নোয়াব, শহীদসহ প্রায় ২০জন সন্ত্রাসী তাকে ওই রিপোর্টারে গাড়ি থেকে নামিয়ে এলোপাথারি পিটাতে থাকে।ওই সময় ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের নির্দেশে তার কর্মী-সমর্থকরা সজল ভূঁইয়াকে টেনে হিচড়ে সবার সামনে মারধর করতে থাকেন। এ সময় দা, লাঠি, কাঠ, ছুরি, চাপাতি, বৈঠা ও লোহার রড দিয়ে তার নাকে-মুখে-বুকে-পিঠে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে পিটিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে ওই রিপোর্টারের সাথে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মামলার আসামীরা হলেন, আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আবুল বাসার ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম,রুবেল মৃধা, মো. মোস্তাফিজ, সাব্বির, শরীফ আলী,জাহাঙ্গীর, তাজুল ইসলাম,জমির খান, সাদির খান, মিঠু খান, শাহীন মিয়া, রবিন ভূঁইয়া, নোয়াব মিয়া, শহীদ মিয়া, জাকির মিয়া, আমির হোসেন, সাদ্দাম হোসেন এবং মনির মৃধা । শেষ ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থক হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত।
এদিকে সোমবার (২৭ এপ্রিল) নরসিংদী সদর হাসপাতালে আহত এস এ টিভির সাংবাদিক সজল ভূইয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়া উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান, সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রোজী সরকার ।রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানায়,সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২০ জনকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানসহ জড়িতরা সবাই পলাতক থাকায় তাদের কাউকে আটক করা যায়নি।