কুমিল্লা দেবিদ্বার রাজামেহার ইউনিয়নে অবস্থিত উপজেলার একমাত্র প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার মান ভাল হলেও অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের অভাবে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স বিদ্যালয়টি।শ্রেণিকক্ষ,টেবিল,চেয়ার,বেঞ্চ,শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদির অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।এদিকে সাধারণ বিদ্যালয়গুলোতে তথ্য প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্লাসরুম থাকলেও প্রতিবন্ধীদের এ প্রতিষ্ঠানটি আজও এ ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
জানা গেছে,২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ জমিতে নির্মিত একটি টিনসেডের ভাড়া ঘরে ৩৫ জন শিক্ষার্থী আর ১০জন শিক্ষক নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে এই স্কুলে রয়েছে ২২ জন শিক্ষক এবং ২৫০ জন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী।প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় উদ্যোগে এটি পরিচালিত হয়ে থাকলেও ২০১৬ সাল থেকে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত সুইড বাংলাদেশ এর দায়িত্বভার গ্রহণ করে এবং কিছু শিক্ষার্থীকে শিক্ষা ভাতা দেওয়া শুরু করে।
এক অভিভাবক জানান,এ স্কুলে উপবৃত্তি কিংবা স্কুল ফিডিং চালু করা হয়নি।অথচ আশপাশের সাধারণ স্কুলগুলোতে এসব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান।এছাড়া প্রতিবন্ধীদের স্ট্যান্ড সাইকেল,প্যারালালবার,পিটি প্যারেডের জন্য ঢোল,হারমোনিয়ামসহ অন্যান্য সামগ্রী না থাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘক্ষণ স্কুলে থাকতে চায় না।ভাঙাচোরা ঘরে পর্যাপ্ত টেবিল,চেয়ার না থাকায় গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
স্কুলে কোনো স্কুল ভ্যান না থাকায় মোটর চালিত রিক্সাযোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছে শিক্ষার্থীরা।অপর এক অভিবাবক জানান,প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন ৮০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে ছেলে কে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হই।খুব দ্রুত স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসা যাওয়ার করার জন্য স্কুল ভ্যান গাড়ীর ব্যবস্থা করে দিলে শিক্ষার্থীরা সাচ্ছন্দ্যমত স্কুলে আসতে পারতো।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তামান্না আক্তার জানান বর্তমানে ২২ জন শিক্ষকদের দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হলেও তাদের বেতন ভাতা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি আমরা।তিনি বলেন,সরকারি সাহযোগিতা না পেলে বিদ্যালটির কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ না থাকায় লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে।এছাড়াও বর্তমানে স্কুলে বিদ্যুত,খেলার মাঠ ও খেলার সামগ্রী ও ভ্যান গাড়ী না থাকায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায়না।
দেবিদ্বার উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আবু তাহের জানান,সরকারি বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যালয়টিকে আমরা ন্যূনতম সহযোগিতাও করতে পারিনি।তবে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভ তাদেরকে উৎসাহিত করে যাচ্ছি।স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি খাস জমিতে খুব দ্রুত প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স তৈরী করে উপজেলার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে কমিল্লা দেবিদ্বার ৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন এলাকাবাসী।