টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শেখ ফজিলাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাফিয়া,রেমি খানম,সুমি আক্তার মৌটুসি,মোহনা আক্তার,মিতু আক্তার,রিয়া আক্তার ও দশম শ্রেণির ছাত্রী মোর্শেদা খাতুন,সানিয়া আক্তার ও লোপা আক্তার।এরা সকলেই করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছেন।বিয়ের পরও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে ওরা স্কুলে এসেছে।তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সরেজমিনে,বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় দশম শ্রেণির ছাত্রী লোপা আক্তারের সাথে।সে জানায়,তার বাড়ি বিদ্যালযের পাশেই সংগ্রামপুর গ্রামে।বাবা সেলিম রাজমিস্ত্রির কাজ করেন,মা শাহিনা আক্তার গৃহিনী।লোপারা দুই বোন কোন ভাই নেই।ছোট বোন সোনালী স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালযের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।লোপার ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া করে স্বাবলম্বী হওয়ার।নাসিং পড়ে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চেয়েছিল।কিন্ত করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তার সে ইচ্ছায় ছেদ পড়েছে।বালিকা বধূ সেজে যেতে হয়েছে স্বামীর সংসারে।
লোপা আরো জানায়,তার অমতেই তার বাবা-মা একই উপজেলার চৈথট্র গ্রামে তার বিয়ে দেয়।প্রতিবাদ করলেও বাবা-মা শুনেনি।আমার পক্ষ হয়ে দাদা ও কাকা প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হয়নি।বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে শেষ মুহূর্তে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে।শুধু লোপা আক্তার নয়,একই শুরে কথা বলেন বাল্য বিয়ে শিকার হওয়া মাফিয়া,রেমি খানম,সুমি আক্তার মৌটুসি,মোহনা আক্তার,মিতু আক্তার,রিয়া আক্তার,মোর্শেদা খাতুন ও সানিয়া আক্তার।
মৌটুসি জানান,সামাজিক পেক্ষাপট ও বাবা-মার কারনেই তাদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে।আমি পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাই স্বামীর সংসার থেকে এখনো বাঁধা আসেনি।প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছি।বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বোরহান উদ্দিন বলেন,বিয়ের পর অনেক মেয়েরই লেখাপড়া বন্ধ করে দেন তাদের পরিবার।নানা বাধার কারনে তাদের বিদ্যালয়ে ফেরানো সম্ভব হয় না।বিয়ের পরও যারা বিদ্যালয়ে এসেছে আমাদের উচিৎ তাদেরকে উৎসাহিত করা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিউটি বেগম বলেন,বিয়ের পরও তারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বিদ্যালয়ে এসেছে এটা ভালো দিক।যা নারী শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখবে।বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের মনোবল অটুট রাখতে সহযোগীতা করবে।বাল্য বিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি এটি দুর করতে সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন।