প্রবল বৃষ্টিতে জমা পানিতে রাজধানীর মিরপুরে বিদুৎস্পৃষ্টে পরিবারের মা-বাবা-বোন হারানো সাত মাসের শিশু হোসাইন বেঁচে আছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুর হাজিরোড ঝিলপাড় বস্তির সামনে প্রবল বর্ষণের কারণে জলাবদ্ধতার পানিতে পড়েছিল সাত মাস বয়সের এক শিশু। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার স্থান থেকে শিশু হোসাইনকে উদ্ধার করা হয়।
অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় শিশু হোসাইন। মায়ের কোলে থেকে ছিটকে পানিতে পড়ে যাওয়ায় পর পানি থেকে তাকে উদ্ধার করে অনিক নামের এক যুবক। পরে হোসাইনের বোন লিমাকে বাঁচাতে গিয়ে অনিকও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
বর্তমানে শিশু হোসাইনের দেখাশোনা করছেন আমেনা বেগম নামে এক নারী। তিনি ঝিলপাড় বস্তির বাসিন্দা।
এছাড়াও শিশু হোসাইনকে বাঁচাতে সাহায্য করেছে হিজড়া জনগোষ্ঠীর বৃষ্টি। এই বৃষ্টিই রাত সাড়ে ১২টার দিকে হোসাইনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া জানান, মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজন নিহত হওয়ার ওই ঘটনাস্থল থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টি হাসপাতালে নিয়ে আসে। শিশুটি ভালো আছে। চিকিৎসা শেষে ভোর ৪টার দিকে হোসাইনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে শিশু হোসাইনকে নিয়ে মিরপুর মডেল থানায় আসেন আমেনা বেগম। সেখানে তিনি শিশু হোসাইনের বেঁচে যাওয়া ঘটনা গণমাধ্যমকে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, হোসাইনের মা যখন কারেন্টের শক খেয়ে পানিতে পড়ে যায়, তখন হোসাইন মায়ের কোল থেকে ছিটিকে পড়ে যায় পানিতে। এ সময় অনিক সঙ্গে সঙ্গে এসে হোসাইনকে পানি থেকে তুলে আমার কোলে দেয়। আমি তাকে আমার বাসায় নিয়ে প্রথম শরীরে গরম তেল দেই। এরপর প্রথমে তাকে নিয়ে যাই সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান ডাক্তার হোসাইনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। সেখানে রাত নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসার পর সকালে ডাক্তার বলে হোসাইন এখন সুস্থ। পরে আমি জানতে পারি হোসাইনের দাদা ও নানা মিরপুর মডেল থানায় আছে, তখন আমি এখানে আসি।
হোসাইনকে পা ধরে টেনে তোলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় আহত হোসেনের পা ধরে টেনে তোলেন একজন।