সরকারি আবাসনে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে টাকা পরিশোধ না করে উল্টো মেশিন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ইউএনও অফিসের হিসাব রক্ষক সোহেল রানার বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে গত ২৪ জুলাই বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজির হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে তার অনুলিপি উপজেলা চেয়ারম্যানকে দিয়েছেন দইখাওয়া এলাকার আমির হোসেনের ছেলে ড্রেজার মালিক মিস্টার রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের প্রকল্প গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ চলছে। এই প্রকল্প গুলোর মধ্যে প্রায় এক বছরে ৬টি প্রকল্পে মিস্টারের ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রায় ৯ লক্ষ টাকার বালু ভরাট কাজ করে নেয় ইউএনও অফিসের হিসাব রক্ষক সোহেল রানা। সেই কাজ চলাকালীন সময়ে কয়েকটি ধাপে টাকা পরিশোধ করলেও সোহেল রানার নিকট মেশিন মালিকের ৯৬ হাজার টাকা পাওনা রয়ে যায়।
ঐ সময়ের মধ্যে সোহেল রানার সন্তান অসুস্থ হলে সে অনুরোধ করে মিস্টারের কাছ থেকে ছেলের চিকিৎসার জন্য আরও ৩৫ হাজার টাকা ধার নেন।
এরপরে সোহেল রানা ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের বনচৌকি গ্রামে খালেক কাজীর পুকুরে মেশিন লাগিয়ে টানা ২৬ দিন বালু তুলে নেন। এ সময় মিস্টার রহমান সোহেল রানার কাছে পূর্বের পাওনা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা চাহিলে তাদের মাঝে বাকবিতন্ড হয়। এই ঘটনার জের ধরে গোতামারি ইউনিয়ন ভূমি অফিসারের সাহায্যে মিস্টারের ড্রেজার মেশিন ধ্বংস ও জব্দ করে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা ক্ষতি সাধন করে। এবং বালু তোলার অপরাধে খালেক কাজী ও মিস্টারের নামে ভূমি আইনে চলমান মামলা করান। মেশিন মালিকের পুর্বের পাওনা সেই ১ লক্ষ ৩১ টাকা সোহেল রানার কাছে চাইলে তিনি আজকাল করে টালবাহানা করতে থাকে।
সর্বশেষ গত ২৪ জুলাই মিস্টার রহমান হাতীবান্ধা উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাজির হোসেনের কার্যালয়ে গিয়ে সোহেলের কাছে পাওনা টাকা চাহিলে উল্টো তার কাছে টাকা দাবি করে এবং বলে এ বিষয়ে কাউকে বিচার দিলে মিস্টারের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন বলে হুমকি দেন।
এ বিষয়ে মিস্টার বলেন, সোহেল হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কর্মকর্তা। তার অনেক ক্ষমতা। আমি গরিব মানুষ। পেটের দায়ে ড্রেজার মেশিন চালে খাই। ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহেল রানা সেই মেশিন দিয়ে গুচ্ছগ্রামে কাজ করে নিয়ে টাকা না দিয়ে উল্টো মামলা দিলো। আমার সবই শেষ। মেশিন নেই। আবার পাওনা টাকাও নেই, সাথে চলমান মামলা। টাকা চাহিলে আরো মিথ্যা মামলার হুশিয়ারি। আপনারাই বলেন, আমি এখন কি করব।মরা ছাড়া আমার আর কোন পথ নেই।
এ ব্যাপারে হিসাব রক্ষক সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, এবিষয়ে কিছু জানার থাকলে উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, এবিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড)কে তদন্তের জন্য দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।