মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পালনে সরকারী নির্দেশনা মানছেনা নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপজেলা খাদ্যগুদাম, রেলওয়ের ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ (আইওডাব্লু), বাংলাদেশ কৃষি সম্প্ররসারণ অধিদফতরের অধীন বিএডিসি’র সার গুদাম। এসব প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিক কোন আয়োজন তো দূরের কথা সামান্য আলোকসজ্জাটাও করেনি। ফলে দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তির উৎসব ও মেলার আয়োজন করেছে। পুরো মার্চমাস জুড়ে এ সংক্রান্ত নানা আয়োজন চলছে সরকারী ও বেসরকারি পর্যায়ে। গত ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ তথা স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণার স্মৃতি বিজড়িত দিন থেকে এসব আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ১৭ মার্চ জাতির জনকের জন্মদিন থেকে আগামী ২৬ মার্চ জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত সরকারী নির্দেশনা তথা পৃষ্ঠপোষকতায় বহুমুখী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিটি সরকারী, স্বায়ত্তশাসীত ও দেশী বিদেশী কর্পোরেট এবং বেসরকারি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানসমুহে আলোকসজ্জা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরই আলোকে সৈয়দপুর উপজেলার প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানই আলোকসজ্জা সম্পন্ন করলেও কিছু কিছু সরকারী প্রতিষ্ঠানই এই নির্দেশনা পালনে অনিহা প্রকাশ করেছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত ১০ টায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে রেলওয়ে কারখানা, অফিসার্স ক্লাব ও মূর্তজা মিলনায়তন ব্যাতিত সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগের আর কোন প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্লেখিত রেলওয়ের ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ (আইওডাব্লু), রেলওয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী (ভূমি) এর কার্যালয়, বিভাগীয় হিসাব নির্বাহীর কার্যালয় (একাউন্টস অফিস), রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ (পিডাব্লিউ) অফিস, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস, বিদ্যুৎ বিভাগ (সাবেক পাওয়ার হাউজ) এর কোন কর্মসূচিও নেই।
এব্যাপারে আইওডাব্লু মোঃ আশরাফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও ভবনে আলোকসজ্জার দায়িত্ব মূলতঃ বিদ্যুৎ বিভাগের। তারা না করায় আলোকসজ্জা হয়নি। এতে আমাদের করার কিছুই নাই। রেলওয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী (ভূমি) এর কার্যালয়ের প্রধান (ইএন) মোঃ আহসান উদ্দীন বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগের সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, শুধু রেলওয়ে কারখানা, অফিসার্স ক্লাব ও মূর্তজা মিলনায়তনে আলোকসজ্জা করা হবে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এসংক্রান্ত কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমানকে মোবাইলে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তাঁর মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
একই অবস্থায় শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বিএডিসি সার গুদাম ও নয়াটোলা এলাকায় এলএসডি গোডাউনে (খাদ্য গুদাম)। খাদ্যগুদামের সহকারী কর্মকর্তা দীলিপ কুমার জানান, গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীমা বেগমের সন্তান অসুস্থ থাকায় আলোকসজ্জা করা হয়নি। এতে শামীমা বেগমকে বার বার মোবাইল করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে পর মূহুর্তেই দীলিপ কুমার জানান, স্থানীয় একটি ডেকোরেশন প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। তারা রাতের মধ্যেই আলোকসজ্জা করে দিবে।
সার গুদামের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এধরনের কোন নির্দেশনা না দেয়ায় আলোকসজ্জা বা কোন আয়োজনই করা হয়নি। আগামীতে নির্দেশনা আসলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হুসাইন জানান, সকলেই সরকারী নির্দেশনা মানতে বাধ্য। কেউ যদি না মানে তাহলে জবাবদিহি করতে হবে। (ছবি আছে)