কাল ১৫ নভেম্বর ভয়াল সিডরের ১৪ বছর। ২০০৭ সালের এই দিনে সুপার সাইক্লোন সিডর আঘাত হানে উপকূলে। ২০ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাস আর ২৪০ কিলোমিটার গতির ঝড়ে বাগেরহাটের শরণখোলা পরিনত হয় ধ্বংস্তুপে।
সেদিন সহস্ররাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। পুরো শরণখোলা সেই বিধ্বস্ত জনপদের মানুষের একটি দাবি ছিল একটি টেকসই বেড়িবাঁধের। একপর্যায়ে সরকার শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিটার টেপকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহন করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পাউবোর উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩০০কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬সালের ২৬ জানুয়ারি বাঁধের কাজ শুরু হয়। চায়নার সিএইচডব্লিউই নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাঁধ নির্মাণের কাজ পায়। তিন বছর মেয়াদের এই কাজ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সেই কাজ দুই দফা মেয়াদ বাড়নো হলেও এখন পর্যন্ত তা শেষ হয়নি।
এদিকে. কাজ চলমান থাকার মধ্যেই বলেশ্বর নদের তীরের রায়েন্দা বড়ইতলা, সাউথখালীর তাফালবাড়ী এবং গাবতলা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টের ব্লক সরে গেছে। নদী শাসন না করায় এসব এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে বাঁধের কাছাকাছি এসে গেছে।
গাবতলা এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর খান, জহির খানসহ অনেকেই জানান, সরকার শত শত কোটি খচর করে বেড়িবাঁধ নির্মান করছে। অথচ তাতে তাদের স্বস্তি নেই। নদী যেভাবে ভাঙছে যে কোনো মুহূর্তে মূল বাঁধে আঘাত করবে। এজন্য শঙ্কিত এলাকাবাসী। দক্ষিণ সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হাওলাদার বলেন, শত শত প্রাণের বিনিময়ে আমার বেড়িবাঁদ পেয়েছি। কিন্তু টেকসই বাঁধ হয়নি। কাজের মানও খারাপ।
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বাঁধের কাজের মান নিয়ে অনেত অভিযোগ রয়েছে। তারপরও যা হয়েছে, নদী শাসন না হলে এই বাঁধ টিকবে না। দ্রুত নদী শাসন না করার দাবি জানাই। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত বলেন, কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নদী শাসনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
সিইআইপির ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. লাকিদুল ইসলাম বলেন, করোনা এবং বার বার দুর্যোগের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। কাজের ৯০ভাগ শেষ হয়েছে। ২০২২সালের এপ্রিলের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে।