চাদাবাজি মাসোয়ারার কারনে বন্ধ হচ্ছে না দখল বানিজ্য/রূপগঞ্জে মহাসড়ক দখলের হিড়িক/ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে ফুটপাতে বাণিজ্য/কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না ফুটপাত বাণিজ্য/ রূপগঞ্জে ফুটপাত দখলের রমরমা বাণিজ্য
দখল দখল আর দখল। চারিদিকে শুধুই দখলের বাণিজ্য। নদী দখল, বাড়ি দখল, সরকারী সম্পত্তি দখল, অসহায় কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে বালি ভরাট করছে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা। গোটা রূপগঞ্জ জুড়েই যেন চলছে দখলের মহোৎসব। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এদের বিরুদ্ধে টু শব্দটি করার মানুষ নেই।
টাকার জোড়ে প্রশাসণকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব দখল বাণিজ্য। ভোক্তভোগীরা প্রতিবাদ করলেই চলে মামলা হামলাসহ নির্যাতন। অভিভাবকহীন রূপগঞ্জে অসহায় মানুষ দখল বাণিজ্যের কাছে জিম্মি।
আবারও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখলে নিয়েছে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান যোগদানের ১৫ দিনেই ফুটপাত ব্যবসায়ীরা মহাসড়ক দখলে নিল। রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা গাউছিয়াস্থ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দৈনিক লাখ টাকার চাঁদাবাজি নিয়ে মহাসড়ক দখলে মেতে উঠেছে চাঁদাবাজরা।
বেপরোয়া এসব চাঁদাবাজরা মহাসড়কের উপরে যেখানে সেখানে দোকান বসিয়ে ইচ্ছেমত চাঁদাবাজি করছে। প্রায় ৪ শতাধিক দোকান বসিয়ে দৈনিক দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে বলে জানা গেছে। এতে মহাসড়কে যেমন যানঝটের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি ভূলতা ফ্লাইওভার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। মহাসড়ক দখল হওয়াতে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়ে যেতে পারে বলে ধারনা করছে সংশ্লিষ্টরা। ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান যোগদান করেই বানিজ্যে মেতে উঠেছে।
ফুটপাত থেকে দৈনিক দেড় লাখ টাকার চাঁদাবাজি তার ইশারায় হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জকে ম্যানেজ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল মোড় হতে গাউছিয়া মোড়, ভূলতা ফ্লাইওভারের নীচে ও ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পর্যন্ত উভয়দিকে প্রায় ৪ শতাধিক অবৈধভাবে দোকান বসেছে।
এসব দোকানের মধ্যে রয়েছে ফলের দোকান, কাপড়ের দোকান, মাছ ও তরিতরকারীর দোকান, ফুসকা, চটপটির, হালিম ও ভ্যানগাড়ীর ভ্রাম্যমান দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকান থেকে এককালীন জামানত ১০ হাজার টাকা করে আদায় করছে চাঁদাবাজরা।
আর প্রতিদিন ২’শ থেকে ৪’শ টাকা করে আদায় করছে। নতুন পজিশন নিতে গেলে দোকানীদের প্রথমেই ১০ হাজার টাকা গুনতে হয়। গোপন সূত্রে জানা গেছে, বিশাল অংকের এসব টাকা স্থাণীয় যুবলীগনেতা ও ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁর পকেটে যাচ্ছে। এত বিশাল অংকের চাঁদাবাজি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাথে ইউনিয়ন যুবলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।
গত দুই বছর আগে এখানে চাদাঁর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে জাকির হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতা খুন হয়। এখন ফের চাদাঁবাজদের দৌরাত্ব বেড়েছে। গরীব ফুটপাত ব্যবসায়ীরা চাঁদা দিতে দিতে নিঃস্ব হচ্ছে। চাঁদার টাকা দৈনিক পরিশোধ না করতে পারলে তাদের জামানত বাতিল করে আবার ১০ হাজার টাকা নিয়ে নতুন ব্যবসায়ীদের বসিয়ে দেয়।
কিন্তু আগের দোকানদার তার জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার সাহসই করেনা। এভাবে গরীব ফুটপাত ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। অভাবের তাড়নায় বয়স্ক ব্যক্তিরা সামান্য কিছু বিক্রির আশায় ফুটে বসলে তাদের কাছেও চাঁদা দাবী করে। না দিলে লাথি দিয়ে মালামাল ফেলে দেয়। এদিকে ফুটপাতের কারনে ঢাকা- সিলেট মহাসড়ক দখল হয়ে যাওয়াতে যানঝট আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে।
সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা ব্যয়ে ফ্লাইওভার নির্মিত হওয়ার পরেও গাউছিয়া এলাকার যানঝট কমছে না। ফুটপাত ব্যবসায়ীরা মহাসড়ক দখলে নেওয়ার কারনে যানঝট লেগেই থাকে। ফুটপাত ব্যবসায়ীরা ফল ও তরিতরকারীর উচ্ছৃষ্ট অংশ ফ্লাইওভারের পিলারের গোড়ায় ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করছে।
এতে দুষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের কারনে পথচারীরাও রাস্তা পারাপার করতে পারছেনা। এজন্য বিভিন্ন সময় দূর্ঘটনার স্বীকার হতে হয় পথচারীদের। ভূলতা ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবলীগ ও ফাঁড়ি পুলিশের যোগসাজসে মহাসড়কে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, এখনই এ সকল চাঁদাবাজি বন্ধ না করলে এলাকার আইনশৃংখলার চরম অবণতি ঘটতে পারে। তাছাড়া মহাসড়ক দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল। এ ব্যপারে ভূলতা ফাঁড়ির নবাগত ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ফুটপাত তুলে দেয়ার জন্য।
কিন্তু একদিকে উঠিয়ে দেই অপর দিকে বসে যায়। আমরা কি করব। রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে ফুটপাত সরানো যাচ্ছেনা জানিয়ে তিনি বলেন এখানে চাঁদাবাজি হয় শুনেছি কিন্তু এ টাকা কে বা কাহারা নেয় আমার জানা নেই।