মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দিনভর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।
অভিযানে অবৈধ বালুমহাল থেকে বালু লুটকারীরা পালিয়ে গেলেও জব্দ করা হয় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ খননযন্ত্র, খননের কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম। একটি স্থান থেকে খননযন্ত্র জব্দের পাশাপাশি একটি ট্রাকসহ ৬৪ হাজার ৬৫২ ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়। পরে জব্দ মালামাল শ্রীমঙ্গল থানা হেফাজতে রাখা হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নেছার উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম অর রশিদ তালুকদার।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় সিলিকা বালু উত্তোলন নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সুযোগে বছরের পর বছর ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রভাবশালীমহলকে বালু লুটকারীরা মোটা অংকের মাসোহারা প্রদান করে প্রকাশ্যে সরকারি বালু লুট অভিযান চালাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউপির মধ্যে ভূনবীর, শাসন, মির্জাপুর ও বৌলাশীর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে হাইলহাওরের ফসলি জমি, বসতভিটার আশপাশের ক্ষেতের জমি ও বাড়ির পুকুর খননের নামে খননযন্ত্র বসিয়ে সিলিকা বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী বালু সিন্ডিকেট চক্র।
ভূনবীর-মির্জাপুর সড়কে ও ভুনবীর তেমুহনা, সাতগাঁও স্টেশন চৌমুহনা এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে দামি সিলিকা বালু প্রকাশ্যে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানে ভরে বিক্রি করা হচ্ছে দিনের পর দিন।
সিলিকা বালু বিক্রি করে একেকজন বালু ব্যবসায়ী অল্প দিনেই গাড়িবাড়ির মালিক বনে গেছেন বনে গেছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি সংঘবদ্ধ চক্র আইনের তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর ধরে উপজেলার সাতগাঁও লছনা নামক স্থান থেকে সাতগাঁও স্টেশন চৌমুহনা ও ভূনবীর চৌমুহনা থেকে মির্জাপুর ইউপির বৌলাশীর পর্যন্ত ও উদনাছড়া ও বিলাসছড়ার মতিগঞ্জ এলাকায় আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে অসংখ্য বালুর স্তূপ করে কোটি কোটি ঘনফুট বালু বিক্রি করছে।
শ্রীমঙ্গল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ‘এ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’ তিনি বলেন, ‘অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। যখনই অভিযোগ পাই, তখননি অভিযান চালাই। বালু ব্যবসায়ীরা জরিমানা পাত্তা দেয় না।’
নেছার উদ্দিন জানান, এর আগেও আহাদ মিয়া নামের এক ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। এক বছরে শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে বালু খাতে কোটি টাকার ওপরে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বালু মহাল রয়েছে ২৮টি। তার মধ্যে দুটি বালু মহাল লিজ দেওয়া হয়েছে কিন্তু আর সব বালু ইজারা বিহীন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সব সময় আমরা তৈরি।