পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন কবর থেকে উত্তোলন করা হলো মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদের লাশ।১সেপ্টেম্বর বুধবার নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সকাল ১১ টায় লাশ উত্তোলন করা হয়।নিহত আবু সাঈদ (৩০) শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের শালচূড়া গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে।
তার পরিবারের অভিযোগ মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদের বন্ধু (আসামী) মোঃ আতিক মিয়া (৩০),জাকির (২৮),তরিকুল ইসলাম (৩০),ডাঃ সোয়েব (২৭),শারমীন সুলতানা ডেইজি (২৫),মোছাঃ জুলি (৩২),মোঃ আলীম মিয়া (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় পরিকল্পতিভাবে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ উঠে।
পরে ওই হত্যাকান্ডকে তারা সুকৌশলে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়।ঘটনার দিন তারা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি না করে তাকে অনেক বিলম্ব করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে আবু সাঈদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।এরপর আবু সাঈদের বন্ধুরা তার লাশ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের জন্য তাড়াহুড়ো করে।
ঠিক তখনি আবু সাঈদের পরিবার এ বিষয় গুলো সন্দেহ হয়।এদিকে গত ২৭ জুন বিজ্ঞ সি.আর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হলে ২২ আগস্ট শেরপুর সদর থানায় মামলাটি এফ.আই.আর ভুক্ত করা হয়।মামলা দায়েরের পর আসামীরা বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা এবং তদবীর করতে থাকে।
এছাড়াও মামলা তুলে নিতে আবু সাঈদের পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।এ ঘটনার পর আবু সাঈদের পরিবার লাশের ময়না তদন্ত করার দাবী জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে।এবিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী একরাল মিয়া (৩২) বলেন,এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ছিল।
কারণ আবু সাঈদ একই এলাকার মৃত কুদর আলীর মেয়ে শারমিন সুলতানা ডেইজী (২৫) এর সাথে আবু সাঈদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।এঘটনা শারমিনের আত্মীয় স্বজনরা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি।এরপর তারা বিভিন্ন সময় আবু সাঈদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুন রাতে আবু সাঈদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।
পরবর্তীতে সেটিকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়।আবু সাঈদের চাচা খাইরুল ইসলাম বলেন,আবু সাঈদের জানাজা নামাজের আগে তার লাশকে আমি গোসল করিয়েছি।আবু সাঈদের শরীরের কোথাও কোন আঘাত ছিল না।মাথার আঘাত দেখে আমার যেটা মনে হয়েছে।তাকে কোন ভারি হাতুড়ি বা রড দিয়ে পেছন থেকে আঘাত করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার শেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুবেল মিয়া বলেন,লাশ উত্তোলনের সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।এছাড়াও নিহত আবু সাঈদের পরিবারের পক্ষে তার বোন তানজিলা খবর ও লাশ শনাক্তে সহযোগীতা করেছেন।
এব্যাপারে নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমান জানান,আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আবু সাঈদের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।লাশের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে।এরপর লাশের ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট আসলে আদালত সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।