দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট মুখপোড়া হনুমান। বড় গাছে, বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীরের ওপরে ও ঘরের চালে দেখা যাচ্ছে হনুমানটিকে। যেখানে যাচ্ছে হনুমানটি সেখানেই ভিড় জমছে কৌতূহলী এলাকাবাসীর। দিচ্ছেন পাউরুটি, ফলসহ নানান খাবার।
ফুলবাড়ী উপজেলার বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন একটি ফার্ণিচারের দোকানের নির্মাণাধিন সোকেচের ওপর বসে থাকতে দেখা মিলে হনুমানটিকে। অনেকে পাউরুটি ও কলাসহ নানান খাবার দিয়েছেন। হনুমানটি সেসব খাবার সানন্দেই গ্রহণ করছে। পরে সেখান থেকে ছুটছে কখনো বিল্ডিংয়ের ছাদে, কখনো গাছের মগডালে এবং কখনো বাড়ির ছাদে, আবার কারো টিনের চালে।
হনুমানটিকে এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষও ছুটছে পিছুপিছু। মানুষ দেখে হনুমানও অস্থিরতাবোধ করছে। জানা যায়, কেউ বিরক্ত করলে মুখে ভেংচি কেটে ভয় দেখায় হনুমানটি। ইতোপূর্বে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলেছে হনুমানটিকে। তবে বন্যপ্রাণী লোকালয়ে নয়, সংরক্ষণের দাবি সচেতন মহলের।
বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন জীবন চন্দ্র রায় বলেন, ‘হঠাৎ করেই সকালে একটি ফার্ণিচারের দোকানে দেখা যায় হনুমানটিকে। এটি একটি মুখপোড়া হনুমান। উৎসুক মানুষ এদের কলা, পাউরুটি, বিস্কুটসহ নানা খাবার খেতে দিয়েছে। হনুমানটির মধ্যে শান্ত ভাব আছে। কারো কোনো ক্ষতি করেনি। খাবার খেয়ে সে এক গাছ থেকে অন্য গাছে চলে গেছে। পরে আর দেখা মিলেনি।’
হনুমানটির পিছু পিছু ছুটে যাওয়া শিশু আসিফ, তাওসিন, মুনতাহা ও সামিয়া বলে, ‘বাড়ির কাছে হঠাৎ একটি হনুমান দেখা যায়। এটি দেখতে বহুমানুষ আসে। আমরা প্রথমবারের মতো এতো কাছ থেকে হনুমান দেখেছি। আগে চিরিয়াখানায় দেখেছিলাম কিন্তু আজ সামনাসামনি বাড়ির পাশেই দেখলাম। প্রথমে ভয়ে কেউ কাছে যাচ্ছিলাম না কিন্তু পরে খাবার নিয়ে গেলে হনুমানটি এসে হাত থেকে খাবার নিয়ে গেছে।’
মধ্যপাড়া বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘দলছুট হয়ে লোকালয়ে আসা হনুমানকে এলাকাবাসী যেন কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করেন, সে বিষয়ে সবার সচেতনতা দরকার। কিছুদিন পর আবার সে তার এলাকায় ফিরে যাবে। যদি লোকালয়ে হনুমানের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে এটি ধরে বনাঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।’