প্রশাসন ও স্থানীয় পাতি নেতাদের ম্যানেজ করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল সাওঘাট এলাকায় ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ঘেসে বসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে নূরে মদিনা ডাইং কারখানা। এরা কোন ধরনের নিয়মনীতি না মেনে ডাইং কারখানার বর্জ্যর্রে পানি সরাসরি খালে ফেলছে এতে করে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ।
নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। প্রতিরোধে প্রসাশনের নেই কোন ভূমিকা। ফুসেঁ উঠছে এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর আগে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে গড়ে উঠে নূরে মদিনা ডাইং কারখানা। পরে বৈধ সংযোগ নিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বৈধ – অবৈধ গ্যাস দিয়ে চলছে ডাইং কারখানা। প্রসাশনকে ফাঁকি দিতে নামে মাত্র ইটিপি প্লান রেখেছে ।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, নূরে মদিনা ডাইং বেশির ভাগ সময়ই ইটিপি প্লান ছাড়া সরাসরি রং মিশ্রিত কেমিক্যাল যুক্ত বর্জ্যের পানি টাটকী খালে ফেলছে, ফলে আশেপাশের এলাকা পরিবেশ দূষিত হয়। এতে করে সাওঘাট গোলাকান্দাইল ও দড়িকান্দি মৌজার কয়েকশ একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবসী প্রতিবাদ করলেও কাউকে তোয়াক্কা করছেনা কারখানা কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ ও প্রসাশনের কাছে ডাইং কারখানা বন্ধের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
জানা যায়,কারখানার মালিক হাসানুল ইসলাম নামে মাত্র পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও ইটিপি প্লান নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলকে ম্যানেজ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ডাইং কারখানা নির্মান করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে আসছে।এতে করে সরকার হারাচ্ছে রাজ্বস্ব আয়। এবং কম টাকা বেতনে শিশু শ্রমিক দিয়ে চালাচ্ছে ডাইং কারখানা। অমান্য করা হচ্ছে শিশুশ্রম আইন।
নূরে মদিনা ডাইং কারখানার আশ পাশে প্রায় ৫ হাজার পরিবার স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। গোলাকান্দাইল সাওঘাট এলাকায় গ্রামের ভিতরে ডাইং কারখানা গড়ে উঠার ফলে এলাকাবাসী পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুকিতে। এলাকার অনেকেই বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এসব ডাইং কারখানা পরিবেশ দূষনের জন্য যেমন দায়ী তেমনি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি করছে। এসব জমিতে সারা বছর কালো পানি জমে থাকার কারনে কোন প্রকার ফসল ফলাতে পারছেনা কৃষকরা। এতে করে কম মূল্যে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। এ ব্যাপারে মালিক পক্ষকে জানালেও কোন প্রতিকার না পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে নূরে মদিনা ডাইং কারখানায় গেলে তারা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে রহস্য জনক ভাবে গেট বন্ধ করে দেয়। ঐ ডাইং কারখানার গার্ডের দায়িত্বরত জাহিদকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কারখানা চালু আছে তবে ভিতরে প্রবেশ নিষেধ। তিনি আরো বলেন ভিতরে মালিক, ম্যানেজার, সুপারভাইজার কেউই নেই বলে এক পর্যায়ে সটকে পড়েন।
পরে নূরে মদিনা ডাইং কারখানার মালিক মোঃ হাসানুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে পরিবেশ অদিধপ্তর দেখবে। আর কোন প্রকার বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি তিনি। বার বার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তিতাস গ্যাস সোনারগাঁও আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌ.মো.মেজবা উর রহমান জানান, আমার এ বিষয়টি জানা ছিলোনা, যদি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে তাহলে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নূসরাত জাহান বলেন, পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কারখানা হলে তাদের বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।