করোনা ভয়ঙ্কর আকার ধারন করছে দিনকে দিন।লাশের মিছিলে যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন সংখ্যা।কিছুতেই থামছে না মৃত্যুর মিছিল।সবাই যেন করোনার কাছে অসহায়।স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বার বার অনুরো করার পরও মানুষ কেন যেন উদাসীন।সাধারণ মানুষ মাস্ক পড়তেই আগ্রহী নয়।অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি তো অনেক দুর।
রূপগঞ্জের রাস্তাঘাটে অবিরাম টহল দিচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদেস্যরা।প্রতিনিয়নত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হচ্ছে।কিন্তু কে শুনে কার কথা।ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চলে গেলেই পূর্বের অবস্থা।যেই সেই।এরই মাঝে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই নেই সুরক্ষা কোন সামগ্রি বা কোনো ব্যবস্থা।
গোটা দেশেই চলছে মহামারী করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা।সারা দেশের মত রূপগঞ্জ উপজেলায়ও বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।উপজেলায় একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা সংগ্রহসহ চলছে কোভিট আক্রান্ত রোগী ভর্তি।এ কারণে প্রতিনিয়ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হচ্ছে করোনা রোগীদের অবাধ যাতায়াত।
সরকারীভাবে উপজেলার প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে প্রবেশের কথা থাকলেও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এর কোন বালাই নেই।দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার করার সময় সরকারীভাবে এ সকল ভবনের প্রবেশ মুখে সুরক্ষা ট্যানেল,হাত ধোয়ার জন্য বেসিন,হ্যান্ড ওয়াশসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কিন্তু বর্তমানে এসব দপ্তর থেকে উধাও হয়ে গেছে এসব সরঞ্জামাদি।সরেজমিনের ঘুরে দেখা গেছে,রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনিক ভবন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,রূপগঞ্জ থানায় প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে হাজার হাজার লোক সমাগম ঘটে।দেশে প্রথম যখন করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার শুরু হয়।
তখন সরকারীভাবে এসব ভবনের প্রবেশ মুখে সুরক্ষা ট্যানেল,হাত ধোয়ার জন্য বেসিন,সাবান,হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ব্যবস্থা ছিল।এমনকি প্রবেশ পথে একজন ব্যক্তি দাঁড়ানো থাকতো জীবানু নাশক স্প্রে দেয়ার জন্য।কিন্তু বর্তমানে এসবের কোন ব্যবস্থাই নেই এসব দপ্তরগুলোতে।থানার গেইটের সামনে বসানো বেসিন ও সুরক্ষা ট্যানেল উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
উপজেলা কমপ্লেক্সের ট্যানেলটি থাকলেও সেটা অনেকদিন অকেজো।উপজেলা ভূমি অফিসেও নেই সুরক্ষা সরঞ্জামাদী।এমনকি খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই নেই জীবানুমুক্ত হবার সুরক্ষা সামগ্রী।এছাড়া বিভিন্ন তহশিল অফিস,ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা ভবন,পুলিশ ফাড়ি,বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিস,ব্যাংক-বীমা,কমিউনিটি ক্লিনিক,বেসরকারি হাসপাতালের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম।
এদিকে এই সকল দপ্তরগুলোতে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে হাজার হাজার মানুষ এসে ভীড় করেন।শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই প্রতিদিন স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসে অন্তত হাজার মানুষ।তাই সেবা নিতে এসে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন,আমি থানায় যোগদানের পর এসব সরঞ্জামাদি পাইনি।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে এই জিনিসগুলো অতি প্রয়োজনীয়।ব্যাপারটা আমার নজরে দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।আমি খুব দ্রুত বেসিন বসানোসহ সব কিছুর ব্যবস্থা করবো।এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহানের সঙ্গে উনার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগোযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরজাহান আরা খাতুন বলেন,সুরক্ষা ট্যানেলের জীবানুনাশক স্প্রে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বিধায় সেটা সরকারিভাবে তুলে দেয়া হয়েছে।এজন্য এর ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।আপাতত আগত রোগীদের স্বাস্থ্য সচেতন হতে রেকর্ডিং করা সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।
আর হাসপাতালে লোকবলের অভাবে মানুষকে জীবানুনাশক হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থাটা কিছুদিন বন্ধ ছিল।তবে আমরা অচিরেই আবার সেগুলো চালু করার ব্যবস্থা করছি।