রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি সারা দেশব্যাপি ইটভাটায় স্বর্ণের খনি হিসাবে খ্যাত ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার রাজোর এলাকার আরবিবি ইট ভাটায় কাঁচা ইট তৈরির জন্য তিনটি মাটির স্তুপের মাটি পরীক্ষা, অনুসন্ধান ও স্ক্যান করার নির্দেশসহ ২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত রোববার ২ জুন বাংলাদেশ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন শাখা ঢাকার ভূতত্ব পরিচালক কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি গুরত্বসহকারে নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি মেহেদী হাসান বাংলাদেশ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরে আরবিবি ইটভাটার মাটির পূর্বের স্থানসহ বর্তমান স্থান পরীক্ষা,অনুসন্ধান ও মাটি স্ক্যানের আবেদন করেন।
প্রক্ষিতে এ অফিস আদেশ দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, সহকারী পরিচালক ভূতত্ব বিভাগ আনোয়ার সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম ও মোহাম্মদ আল রাজীকে আগামী ৩ জুন থেকে ৫ জুন কিংবা ঘটনাস্থলে যাত্রার তারিখ হতে ৩ দিনের মধ্যে প্রকৃত ঘটনার তথ্যসহ প্রতিবেদন তাদেরকে জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা,ডিজিটাল প্লাটফর্মসহ টিভি চ্যানেল গুলোতে “স্বর্ণের খোঁজে ছুটছে মানুষ দিনরাত খুঁড়ছে মাটি”, “সোনার খোঁজে হাজার হাজার নারী পুরুষ খুঁড়ছে মাটি” এরকম বিভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব সংবাদ প্রকাশিত হবার পর ওই ইটভাটায় স্বর্ণের খোঁজে প্রতিদিনে ও রাতে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের সমাগম হতে থাকে। প্রতিটি মানুষ স্বর্ণের সন্ধানে মাটি খুঁড়তে সাথে নিয়ে যায় কোদাল, বৈশলা, কুন্নি, খুন্তি, বল্লবসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র। এবং দিন দিন এর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত মানুষের সমাগমে ও সবার হাতে বিভিন্ন মাটি খুঁড়ার অস্ত্র থাকায় যে কোন মুহূর্তে মানুষে -মানুষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ২৫ মে ইটভাটায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন। তারপর থেকেই সেখানে পুলিশি পাহারা বসানো হয়। এতে সাধারণ মানুষ ইটভাটায় ভিড়তে পারে না। পরিবেশ পুরোটাই প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু নামে মাত্র সেখানকার মাটি কিছুটা সরানো হলেও প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টলি মাটি ভাটা চত্বরে রযে যায়
১৪৪ ধারা শিথিল হলে আবারও মানুষ স্বর্ণের সন্ধানে ওই ভাটায় মাটি খনন করতে যেতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। এরি মধ্যে রাণীশংকৈল উপজেলার কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি মেহেদী হাসান বিষয়টি নজরে এনে বলেন, যেহেতু ওই ইটভাটার মাটি ঐতিহাসিক এলাকা থেকে কাটা হয়েছে। এবং মানুষের মুখে মুখে স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি চরম ভাইরাল হয়েছে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে এটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদি কোন ধরনের স্বর্ণ পাওয়া যায়। তাহলে সেটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হবে। তাই তিনি ইটভাটার মাটির পূর্বের স্থানসহ বর্তমান স্থান পরীক্ষা,অনুসন্ধান ও মাটি স্ক্যানের জন্য ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, বাংলাদেশ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের নির্দেশে ওখানকার মাটি পরীক্ষা করা হবে বলে জানতে পেরেছি। তারা আসলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।