রাজবাড়ির রামকান্ত পুর ইউনিয়নে গভীর রাতে শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে বিভিন্ন রুমে তালা লাগিয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী ও মেয়েকে জখম করেছে পাষন্ড পিতা। তিনি দরোজা ভেঙ্গে ওই দুই জনকে কুপিয়ে জখম করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘাতক স্বামী ও রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বাল্লাহুরিয়া গ্রামের মৃত আনসার সরদারের ছেলে মোঃ সামাদ সরদার (৫৫) কে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বাদী আহত স্ত্রীর ভাই আকরামুজ্জামান জানিয়েছেন, দীর্ঘ ২২ বছর আগে একই ইউনিয়নের কাজীবাঁধা গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের মেয়ে নাছিমা বেগম বিউটি (৪০)-এর সাথে মোঃ সামাদ সরদারের বিয়ে হয়। বেশ কিছু দিন মোঃ সামাদ সরদার মালয়েশিয়া অবস্থানের পর দেশে ফিরে আসেন। তিনি দেশে ফিরে স্থানীয় ঘোড়া মার্কেটে মুদি দোকান পরিচালনা শুরু করেন। তবে তিনি জুয়া খেলায় মারাত্বক ভাবে নিজেকে নিয়জিত করেন। আর জুয়া খেলায় পরাজিত হয়ে মাঝে মধ্যেই সে তার স্ত্রী বিউটির কাছে যৌতুক দাবীর পাশাপাশি শাররীক নির্যাতন করে।
সর্বেশেষ বিউটিকে নির্যাতন করার কারণে গত ১৭ জুন সে তার মেয়ে সামসুন্নাহার ছন্দা (১৮) কে নিয়ে বাবার বাড়ী চলে আসেন। এরই মাঝে গত শুক্রবার রাত আড়াই টার দিকে সামাদ সরদার দা, হাতুরি ও ৫টা তালা নিয়ে তাদের বাড়ীতে প্রবেশ করে। সে ওই বাড়ীর বিভিন্ন ঘরে দরোজায় বাইরে থেকে তালা গুলো লাগিয়ে দেয় এবং তার স্ত্রী ও মেয়ে ঘুমিয়ে থাকা রুমের দরোজা ভেঙ্গে ভেতেরে প্রবেশ করে।
সে সময় মা ও মেয়ের চিৎকারের বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা ঘুম থেকে উঠলেও বাইরে বের হতে পারছিলেন না। পরে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে তালা গুলো ভেঙ্গে বাড়ী লোকদের উদ্ধার করে। এরই মাঝে সামাদ তার স্ত্রী ও মেয়ের মাথা দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ওই সময়ই সামাদকে আটক করে রাজবাড়ী থানায় সংবাদ দেয়া এবং আহতদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া রাজবাড়ী থানার এসআই বোরহানউদ্দিন জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে ১টি দা, ১টি হাতুরি ও ৫টি তালা তিনি উদ্ধার করেছেন।
রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। সেই সাথে ঘাতক সামাদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজবাড়ী থানায় হাজতে আটক থাকা স্বামী সামাদ জুয়া খেলার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, বিউটি তার বাড়ী থেকে চলে আসার পর অনেক বার তাকে তিনি ফোন দিয়েছেন। তবে তার ফোন সে রিসিভ করে না, কথাও বলে না। যে কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।