মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। গত বছরের ১০ জুন রাজনগর থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন নজরুল। এরপরেই বদলে যেতে থাকে রাজনগরের চিত্র। জিডি থেকে শুরু করে পারিবারিক সালিশ, সবকিছুতেই উপস্থিত ওসি নজরুল ইসলাম। গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ সবকিছু থেকেই তার ঘুষ নেয়া এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন অজুহাতে- কখনো স্টাফদের খাবার, কখনো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা বলে টাকা দাবি এবং ঘুষ নেন ওসি। ভয়ে এলাকায় মানুষ বিপদে পড়লেও থানায় যেতে চাইছে না।
এসব বিষয়ে একের পর এক অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। সর্বশেষ অভিযোগ গেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এর আগে এসপি, ডিআইজিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ গেলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। সরশেষ ইউনিয়ন নির্বাচনে তার ঘুষের বাজার আরও জমজমাট হয়ে ওঠে।
রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন জনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, টাকা ছাড়া রাজনগর থানায় কিছুই হয় না। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় গরু, ছাগল, মোরগ পর্যন্ত ঘুষ দেয়ার কথা জানান অনেকে। তবে হয়রানীর ভয়ে অন দ্যা রেকোর্ডে কেউ কিছু বলতে চান না। স্থানীয়দের মুখে মুখে রাজনগর থানার ওসির ঘুষ বাণিজ্য।
রাজনগর উপজেলা ছাত্রলীগ ও জেলা শ্রমিক লীগের দুই নেতা হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের কাছে একটা গরু দাবি করেন ওসি নজরুল। গরু দেয়ার জন্য বিভিন্ন অফিসারদের পাঠিয়ে বারবার চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওসি জানান, ৬০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনে ফেলছি, আপনাদের গরু দিতে হবে না, নগদ টাকা দিয়ে দেন। পরে হয়রানির ভয়ে আমরা টাকা দিয়ে দেই বাধ্য হই।
এভাবে ওসি অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। রাজনগর থানার নানা উন্নয়নের কথা বলে, কখনো থানায় এসি স্থাপনের কথা বলে টাকা নেন। সুযোগ পেলে ওসি চান নিজের হাতে পকেট থেকে টাকা নিয়ে নিতে। মানুষ এতটা ভয়ে থাকে যে, বিপদে পড়লেও থানায় যেতে চায় না। পুলিশ বিভাগে এমন অফিসার দেশের কোথাও আছে কিনা আমাদের জানা নেই। কিন্তু আমরা উপজেলাবাসী এসব থেকে মুক্তি চাই।