কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে যৌতুকের জন্য রিনা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করে আত্নহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে স্বামী এয়াকুবের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার জোড্ডা ইউপির ঠোল্লাপাড়া গ্রামের অহিদুর রহমানের বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী এয়াকুব ও শ্বশুর অহিদুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত রিনা পাশ্ববর্তী পানকরা গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে।
জানা যায়, গত চার বছর পুর্বে ঠোল্লাপাড়া গ্রামেরঅহিদুর রহমানের ছেলে এয়াকুবের সঙ্গে পানকরা গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে রিনা বেগমের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের সময় এক লাখ টাকা যৌতুক নেয় এয়াকুব। এতেও ক্ষান্ত হয়নি সে। প্রায় সময় যৌতুকের জন্য মারধর করতো এয়াকুব। এনিয়ে এলাকায় বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত ১৫ দিন পূর্বে একটি মোবাইল সেট রিনার পরিবারের কাছে দাবী করে এয়াকুব। এটি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এয়াকুব রিনাকে বেড়ধক মারধর করে। পরে সে তার পিতা আবু তাহেরের কাছে চট্টগ্রাম চলে যায়। গত রোববার চট্টগ্রাম থেকে রিনা স্বামীর বাড়ি ঠোল্লাপাড়া গ্রামে যান। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে মারধর করে।
এর কিছুক্ষণ পরে সে বসত ঘরের ভুতুরের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচার করে তার স্বামী এয়াকুব। ঘটনার দিন রাতে পুলিশ খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয় নিহতের বড় ভাই মহিন উদ্দিন বলেন, আমার বোন তিনটার দিকে মুঠো ফোনে কল করে অনেক কান্নাকাটি করে বলেন তার স্বামী এয়াকুব আজকে তাকে অনেক মারধর করেছে এ বলে ফোন কেটে দেয়। এর ১০ মিনিট পরে তার মৃত্যুর খবর পাই। তার স্বামী এয়াকুব বলেছেন সে না কি আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে যৌতুকের জন্য মারধর করে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছেন। তিনি এই হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জোড্ডা পূর্ব ইউপির ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহ আলম বলেন, বিয়ের পর থেকে প্রায় সময় এয়াকুব রিনাকে মারধর করত। আমার এ নিয়ে বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক করি। আজকে খবর পেলাম রিনা আত্মহত্যা করেছে। এটি আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। এ ঘটনার সুস্থ তদন্তের মধ্যে সঠিক কারণ জেনে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।