নওগাঁর মান্দায় চাঞ্চল্যকর এমরান হোসেন রানা (৩৮) হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মিজানুর রহমান রঞ্জুকে (২৭) তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে মান্দা থানা পুলিশ। মিজানুর মান্দার স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরুজ্জামান মাস্টার হত্যা প্রচেষ্টা, ধর্ষণ চেষ্টা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনসহ প্রায় ৪টি মামলার আসামী।
বুধবার (২২ডিসেম্বর) সকালে আদালতের মাধ্যমে মিজানুরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় অন্যদের সাথে তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দু এবং ছোট ভাই রায়হানও এজাহারভুক্ত আসামী। মিজানুর গ্রেফতার হওয়ার খবরে সতীহাট বাজারে মিস্টি বিতরণ করেছে স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে মারপিট-খুনজখম,সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি সহ স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা হত্যাকারী মিজানসহ সংশ্লিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মান্দা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১২ নভেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী এবং হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের সমর্থকদের মধ্য স্থানীয় সতীহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুলের সমর্থক এমরান হোসেন রানাকে মিজানুর রহমান ও তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দুসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন রকমের ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে উপর্যপরি আঘাত করে। এতে রানার মৃত্যু হয়েছে জেনে তারা তাকে ফেলে পালিয়ে চলে যায়। স্থানীদের সহায়তায় মৃতপ্রায় অবস্থায় রানাকে প্রথমে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতাল ও পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আট জন আহত হন।
এই ঘটনায় নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে ১৯ নভেম্বর মান্দা থানায় ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০২/৩০৭/১১৪/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন মঙ্গলবার(২১ ডিসেম্বর) বিকেলে মান্দা উপজেলার গনেশপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে। নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বলেন, আমার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে রানা ছিল আমার
বেঁচে থাকার অবলম্বন। মিজানুর সহ যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং ফাঁসি চাই।
গনেশপুর ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মিজানুর রহমান এবং তার পরিবার সন্ত্রাসী পরিবার। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারপিট, খুন- জখম, টাকার বিনিময়ে অপহরন, ডিপটিউবয়েল, জমি ও দোকানঘর দখল করায় তার কাজ। গনেশপুর সহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের সাধারন মানুষ তাদের দ্বারা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত। জীবনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহিনুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, এই মামলায় মিজানুর রহমান নামে একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের ধরতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।