1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব
বাংলাদেশ । বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
ডাঃ তাহসীন বাহার সুচনার বিজয়ে কুমিল্লার লন্ডন প্রবাসীদের ইফতার ও মিষ্টি বিতরন এক মিনিটে ৮টি ক্রিম বিস্কুট খেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ আবেদন । বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন সাকিব আল হাসান অবরোধের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রলীগের মোটরসাইকেল শোডাউন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বিএনপি জামায়াতকে অগ্নি সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে নির্বাচনে আসার আহবান-এমপি বাহার হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে  সৈয়দপুর পুলিশের সাফল্য, গ্রেফতার ৩ কুলাউড়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সুপারের তদারকি জাপার সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ কুমিল্লায় হরতাল-অবরোধে ২২ পিকেটিং-ভাংচুর মামলা গ্রেফতার ১০৪

মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব

মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম সাদিক:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১
  • ৩৫৩ বার পড়েছে
মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব

মানুষের সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে আল্লাহ পৃথিবীর পরতে পরতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছেন অসংখ্য নেয়ামত রাজি। পৃথিবীকে সাজিয়েছেন নানা জীববৈচিত্র্যে। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের জন্য পৃথিবীকে সুশোভিত করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন এবং তারা আল্লাহকে ভালোবাসে’(সুরা মায়িদা-৫৪)। মনীষীদের মতে, আল্লাহ জড় ও জীব মিলে আশি হাজার বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এই আশি হাজার বা তারও অধিক প্রাণীর মধ্যে মানুষই হচ্ছে আশরাফুল মাখলুকাত। সৃষ্টির সেরা মানব জাতিকে জমিনে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য পাঠানো হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে- ‘অবশ্যই আমি আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং তাদের পানিতে ও স্থলে প্রতিষ্ঠিত করেছি, তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’ (সুরা ইসরা-৭০)। জাগতিক সব কাজকর্ম উপলক্ষ মাত্র। সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি লাভই ধর্মপ্রাণ মানুষের সর্বোচ্চ মর্যাদার সম্বল। স্রষ্টাপ্রেম অর্জনের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে তাঁর প্রতি গভীর ধ্যানমগ্নতা, আত্মসমর্পণ ও মনোনিবেশ করা। সমগ্র সৃষ্টি তার স্রষ্টাকে ভালোবাসে, আর স্রষ্টা নিজে তাঁর সর্বোত্তম সৃষ্টি ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল (সাঃ)-কে ভালোবাসেন।

স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্টির প্রেম, অন্যটি হলো সৃষ্টির সঙ্গে সৃষ্টির প্রেম সর্বজনীন। নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, সাদা-কালো, লম্বা-খাটো সব মানুষের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। কেননা প্রত্যেক মানুষই আল্লাহর সৃষ্টি। প্রতিটি মানুষ সে বিশ্বাসী হোক বা অবিশ্বাসী মৌলিক সম্মান ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান। আর স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ শ্রেণিবৈষম্য থেকে পবিত্র। ইরশাদ হচ্ছে- ‘আমি মানবজাতিকে সম্মানিত করেছি, তাকে কর্তৃত্ব দিয়েছি স্থলে ও জলে, তাদেরকে দিয়েছি উত্তম জীবিকা এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি আমার সৃষ্টি জগতের অনেকের ওপর’(সুরা বনি ইসরাইল-৭০)। মানব জাতিকে এ জগতে রাজত্ব এবং তাঁর আনুগত্যকারীদের পরবর্তী জীবনে জান্নাতে রাজত্ব দেয়ার সুসংবাদ দিলেন। যে জাতি সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তাঁর প্রেরিত সব বিধিবিধান মেনে জীবনযাপন করবে তাকে উভয় জাহানের রাজত্বের সুসংবাদ দিয়েছেন শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে। মানুষের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে আকাশ, বাতাস, চাঁদ, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র। মানুষের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে নদী, সাগর, পাহাড়, বন-বনানী, বৃক্ষ-তরুলতা। মানুষকে ঘিরেই রচিত হয়েছে, ধর্ম, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ, সভ্যতা। মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ইহকাল এবং সুখময় পরকালের জন্যই আল্লাহ যুগে যুগে, স্থানে, স্থানে পাঠিয়েছেন অসংখ্য নবী-রাসুল। নাজিল করেছেন একশ চারটি আসমানি কিতাব।

আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠ মর্যাদা দিয়েছেন, এছাড়াও মানুষকে দিয়েছেন পৃথিবী চমকে দেওয়ার মতো আবিষ্কারের জ্ঞান। যে জ্ঞান দিয়ে মানুষ সাগরেও দেখিয়েছে তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ, সীমাহিন সাগরগুলো আজ মানুষের আয়েত্ব। যে লোহার ধর্ম পানিতে তলিয়ে যাওয়া, সেই লোহাকেই মানুষ তার বুদ্ধির জোরে পানিতে ভাসিয়ে দিল। এমন কী? সেই লোহার তৈরি জাহাজে চড়ে মানুষ অকূল সাগর চষে চষে বেড়াচ্ছে। এমনকি মানুষে আকাশেও করায়ত্ব করে নিয়েছে। সাড়ে তিন হাত শরীরের মানুষ উঁচু উঁচু ইমারত নির্মাণ করছে। কল-কারখানা তৈরি করছে। দীর্ঘ নদীর ওপর সেতু বানাচ্ছে। আবার পাখির মতো আকাশেও উড়ে বেড়াচ্ছে। কখনো কী চিন্তা করি, মানুষ কীভাবে আকাশে উড়াল দিল? মানুষের পাখা নেই, তবু সে আকাশে ওড়ে। পৃথিবী থেকে উড়তে উড়তে কত শত আলোকবর্ষের দূরের গ্রহ চাঁদের গায়ে পায়ের ছাপ রেখে এসেছে! মানুষকে আল্লাহ এই অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘ভূ-পৃষ্ঠে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা এসবকে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। আর তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যেন তার আদেশ ব্যতীত ভূ-পৃষ্ঠে পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান’ (সুরা হজ-৬৫)। আল্লাহ মানব জাতিকে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘অবশ্যই আমি আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং তাদের জলে-স্থলে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছি’ (সুরা বনি ইসরাইল-৭০)।

আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছেন, যেন মানুষ তার সৃষ্টিজগতের যত্ন নেয়। ইরশাদ হচ্ছে- ‘যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ (কিসাস) ছাড়া অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করল’ (সুরা মায়েদা-৩২)। পৃথিবীর সব কিছু আল্লাহ মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘তিনি সেই সত্তা, যিনি তোমাদের (মানবের) কল্যাণার্থে পৃথিবীর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন’ (সুরা বাকারা-২৯)। মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অলংকৃত করে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, আলো, বাতাস, জীবজন্তু সবই মানুষের কল্যাণে সদা নিয়োজিত রেখেছেন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানুষের কল্যাণে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের আদেশ করবে, মন্দ কাজে বাঁধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে’ (সুরা আল ইমরান-১১০)।

মহান আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অলংকৃত করে তাদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখারও ব্যবস্থা দিয়েছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন রাসুল (সাঃ)-এর আদর্শ বাস্তবায়ন ও তাঁর ভালোবাসা অন্তরে স্থান দেওয়া ছাড়া শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব নয়। ইরশাদ হচ্ছে- ‘বলো, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমাকে অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন’ (সুরা আল ইমরান-৩১)। উম্মতে মুহাম্মদির প্রতি তাঁর অনুগ্রহ ও অবদান সবচেয়ে বেশি। রাসুল (সাঃ)-এর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা একটি অপরিহার্য কর্তব্য, যার অবর্তমানে ইমানই পরিশুদ্ধ হয় না। এ সম্পর্কে রাসুল (সাঃ)-এরশাদ করেন- ‘তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাঁর কাছে তাঁর মা-বাবা, সন্তানসন্ততি ও সমগ্র বিশ্ববাসী অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় না হব’ (বুখারি ও মুসলিম)। তাঁর জন্য রাসুল (সাঃ)-এর আদর্শ বাস্তবায়নে মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলে। রাসুল (সাঃ)-এর আদর্শ দ্বারা পরিচালিত জীবনব্যবস্থা মানবিক সমাজ ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইহকাল ও পরকালে সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ)-কে ভালোবাসতে হবে এবং সৎ পথে চলতে হবে। কথায়, কাজে, চিন্তায়, রাসুল (সাঃ)-এর আদর্শ পরিপূর্ণ অনুসরণ সম্ভবপর হলেই উভয় জাহানে আল্লাহর কাছে মানুষের চেয়ে অন্য কোনো সৃষ্টি অধিক সম্মানিত হবে না।

মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম সাদিক
লেখকঃ প্রাবন্ধিক ও মুদ্রণ ব্যবস্থাপক
দৈনিক সিলেটের ডাক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD