আমাদের প্রিয় রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) শেষ নবী। উনার পরে আর কোনো নবী-রাসূল এই পৃথিবীতে আসবেন না কোরআন-হাদীস মতে কেয়ামত পর্যন্ত নবী-রাসূলদের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটিই করে যাবেন আলেমওলামাগণ। আলেমওলামাগণ তাই এই পৃথিবীর জন্য অনেক বড় রহমত। কারণ তারা কোরআন ও হাদিসের পবিত্র বাণীকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আলোকিত করছেন আমাদের পৃথিবী। তাজা ও জীবন্ত রাখছেন শান্তির ধর্ম ইসলামকে। এমনই একজন আলেমের রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকি দিয়েছে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের আঠার বাঁক গ্রামের আপন সহোদর ছোট ভাই শহীদউল্লাহ’র স্ত্রী রিনা বেগম। যাকে হুমকি দিয়েছেন তিনি হলেন রিনা বেগমের আপন ভাসুর ক্বারী আমান উল্লাহ।
উভয়েরই বাড়ি আঠার বাঁক গ্রামের পশ্চিম পাড়া মুন্সী বাড়ি। ক্বারী আমান উল্লাহ একই গ্রামের এই মুন্সী বাড়ির মসজিদের ইমাম। এখানে কয়েক মাস আগেও মসজিদ ছিল না। আঠার বাঁক গ্রামের পশ্চিম পাড়ার সমাজকে ভাগ করার অপকৌশল হিসেবেই এই মসজিদ দেয়া হয়েছে। মসজিদ আল্লাহর ঘর, মসজিদ আল্লাহর হুকুম ছাড়া হয় না। মসজিদ হওয়াতে সমস্যা হয়নি। মসজিদ দিয়ে মুন্সী বাড়ির মানুষ আলাদা সমাজ করার পাঁয়তারা করছে। সমস্যা এখানেই। এই কারণেই সমাজে তৈরী হয়েছে চরম দ্বিধা বিভক্তি। ক্বারী আমান উল্লাহ এর আগে দীর্ঘদিন ধরে বহু মসজিদে ইমামতি করেছেন।
এখন তিনি নিজের বাড়ির মসজিদে ইমামতি করছেন। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার তার পেছনে নামাজ পড়া মুসুল্লিরাই ক্বারী আমান উল্লাহর বাড়ি ঘরে হামলা করেছে। তাদের বাড়ির লোক মনির হোসেন, ইব্রাহিম, আনিস, ভাতিজা ওমর ফারুকও মহিলা রিনা বেগমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্তই আমান উল্লাহ ইমামতি করবেন। এই মসজিদে ইমামতির চাকরি চলে গেলে অন্য মসজিদে ইমামতি করবেন। আমান উল্লাহর এক ছেলে হাফেজে কোরআন এবং এক মেয়েও কোরআনের হাফেজা। তিনি নিজেও ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত। তার পরিবারটি একটি পরিপূর্ণ ইসলামী পরিবার। তিনি রাজনীতি বুঝেন না, বুঝেন নাসমাজনীতি, জানেন না কোনো সামাজিক জটিলতা, নেই কোনো টাকা-পয়সার সামর্থ্য। কোনো মতে মসজিদে করা ইমামতির বেতন দিয়েই চলে তার সংসার।
নুন আনতে পানতা পুরায় অবস্থা। সহজসরল ধর্মপ্রাণ আলেম আমান উল্লাহর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া ও সন্ত্রাসী মহিলা রিনা বেগমের জঘন্যতম জুলুম নির্যাতন শিকার। এই মহিলা সর্বশেষ গত ২৬শে মার্চ ক্বারী আমান উল্লাহর বাড়ি ঘরে সশস্ত্র হামলা চালায় তার ছেলেকে নিয়ে। মায়ে ছেলে মিলে দা, ছেনি দিয়ে কুপিয়ে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ক্বারী আমার উল্লাহর বাড়ি ঘরের ক্ষতি সাধন করেন। এবং এসময় রিনা বেগম, ভাসুর আমান উল্লাহকে হত্যা করে, তার রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকিও দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে ক্বারী আমান উল্লাহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ছুটে যান।
তাৎক্ষণিক গ্রামের সর্দার আবুল কাশেম মজুমদারের নেতৃত্বে প্রায় সাত/আট জনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় আমান উল্লাহ বলেন, “রিনা বেগম আমাকে মেরে আমার রক্ত দিয়ে নাকি গোসল করবে! আমি আপনাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাই। আমার বাড়িঘর কুপিয়ে, আমার জায়গা করে আছে। আমি সমাজবাসীর কাছে বিচার চাই। ক্বারী আমান উল্লাহ কথা বলা শেষ করতে না করতেই গ্রামের মানুষদের সামনেই রিনা বেগম আবারও ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয়। সমাজের বিচারআচার কোনো কিছুই সে মানবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। সে যেভাবে বলে সেভাবেই হবে। এসময় উপস্থিত হয় সর্দার মনির হোসেন। তিনি বলেন, কাশেম ভাই আপনারা এখানে আইসছেন কেন? আপনারা এখানে বিচার করতে আসিয়েন না। এটার বিচার ফারুক আসলে করবে। আমরা সবাই তারে মানি। ঈদ এলো। ফারুকও এলো। কিন্তু কোনো বিচার পেল না ইমাম আমান উল্লাহ। এভাবেই এখানে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।
সামাজিক কথাবার্তা চলা অবস্থাতেই রিনা বেগমের ছেলে সাইফুল ইসলাম গ্রামের মানুষদের ধমক দিয়ে তেড়ে আসে। তাকে সবাই মিলে শাসিয়ে কোনোরকম মানসম্মান নিয়ে একটি বিচারের তারিখ জানিয়ে গ্রামবাসী চলে আসেন। পরবর্তী বিচারকের দিন শুক্রবার রিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন না। চলে গেছেন বাপের বাড়ি। এরপর রিনা বেগমের পক্ষে অবস্থান নেয় বিশিষ্ট সমাজ সেবক নামে পরিচিত আবু ছায়েদ, আমিনুল হক মাষ্টার, মুন্সী বাড়ির সর্দার মনির হোসেন, ওমর ফারুক। তাদের এমন অন্যায়মূলক অবস্থানের কারণে এখন পর্যন্ত গ্রাম্য সালিস আর হয়নি।
এত কিছুর পরও শুক্রবার বিকেলে রিনা বেগম, ভাসুর আমান উল্লাহর বাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দেয়। পরে গ্রামের সাধারণ লোকজন গিয়ে রাস্তা অবমুক্ত করেছে বলে জানতে পেরেছি। এই রিনা বেগম একই গ্রামের আরেক আলেম ক্বারী আমিনুল ইসলামের মাঠের জমি নিজের হাতে কোদাল দিয়ে কেটে জোর করে দখল করে আছে। ভুক্তভোগী পরিবার গ্রামের সরদারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরেও কোনো বিচার পায়নি। মসজিদের ইমাম আমান উল্লাহও বিচার পাচ্ছেন না। বিচার না পাওয়ার প্রধান কারণ যারা গ্রামে বিচারআচারে নেতৃত্ব দেয়, তারা বেপরোয়া মহিলা রিনা বেগমের পক্ষ নেয় প্রতিবারই।
কোনো এক অজানা কারণে রিনা বেগমের বিচার গ্রামের সর্দারেরা করতে পারে না। এছাড়াও জামাত নেতা মাওলানা আব্দুর রহিম জমানী সাহেবের গায়েও হাত উঠানোর মত গুরুতর অভিযোগ আছে এই রিনা বেগমের বিরুদ্ধে। তিনি রিনা বেগমের কাছে বারবার অপমানিত হয়েছেন। আব্দুর রহিম জমানি সাহেব, রিনা বেগমের বড় ভাসুর, আমার উল্লাহ মেঝো ভাসুর। রিনা বেগমের স্বামী শহীদ উল্লাহ সবার ছোট। ছোট ভাইয়ের বউ হয়ে সবাইকে মেরে এভাবেই নাজেহাল করছে সে। এই রিনা বেগমের বিচার কি বাংলাদেশে হবে না? নাকী রিনা বেগমদের বিচার করা অসম্ভব! সে বারবার অপরাধ করে যাবে আর বারবারই সবাইকে তা সহ্য করে যেতে হবে? এর পেছনের রহস্য ভেদ করা জরুরি। নইলে মানবতা ক্ষতবিক্ষত হবে প্রতিনিয়ত।
বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে। এছাড়াও রিনা বেগম গ্রামের কারো সাথে ঝামেলা হলে বাপের বাড়ির লোক দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার এবং নারী নির্যাতন মামলার হুমকি দেন। এর আগে তার বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গ্রামের আটদশজন তরুণের বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতনের মামলা দেয়। ওই সময়ও এই মহিলার পক্ষে অবস্থান নেয় গ্রামের প্রধান সর্দার আবু ছায়েদ। আঠার বাঁক গ্রামের মানুষ এই মহিলার জুলুম নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে চায়, নিস্তার চায়।
কিন্তু কিভাবে তারা তার ভয়ংকর আক্রমণ থেকে বাঁচবে, কেউ জানে না। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন, এই কলাম লেখার কারণে আমি রিনা বেগমের কয়টা মিথ্যা মামলার শিকার হই। আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জেলে বসে হলেও তার সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখবো।