বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভোলায় তরুণীকে অপহরণ ও ধর্ষনের অভিযোগে মো. আবির হাসানকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। তিনি পাবনা জেলার চাঁদমোহন থানার বরদা নগর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফরহাদ সর্দার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এসময় তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভোলা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জনৈক মোসাঃ তাসনুর বেগম (৪৫) তার মেয়ে মিরা আক্তার ইতি (১৮) এর নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্তে থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নিখোজ মিরা আক্তার ইতি আসামির মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কৌশলে ভিডিও কলে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানায় আসামি আবির তাকে অপহরণ করে দিনাজপুরের কোতয়ালী থানা এলাকায় একটি রুমে আটকে রেখেছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে দিনাজপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন পাহাড়পুর ইকবাল স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে আসামি আবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী অনুসন্ধানে জানা যায়, আবির একজন পেশাদার অপরাধী ও প্রতারক। তিনি ভুক্তভোগীর সাথে মোবাইল ফোনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে তার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও নিয়ে তাকে ব্লাকমেইল করে আসছিলেন।
তিনি নিজেকে বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের কাছ থেকে ইতোমধ্যে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি আবির সরকারী সফরে ভোলায় এসেছেন বলে ভুক্তভোগীকে জানান এবং ভোলার সার্কিট হাউজে তার সাথে দেখা করার জন্য বলেন।
মিরা আক্তার ইতি আবিরের সাথে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে সার্কিট হাউজ যাওয়ার পথে ভোলা সার্কিট হাউজ মোড়ের আগে হিড বাংলাদেশ অফিসের সামনে আবির তার একাধিক সহযোগীকে নিয়ে ইতিকে একটি মাইক্রোবাসে টেনে তুলে চেতনানাশক দ্রব্য দ্বারা অজ্ঞান করে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা এলাকায় নিয়ে যান এবং সেখানে একটি রুমে তাকে আটক রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এরকম আরো একাধিক ঘটনার সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি মানবপাচার চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য বলে ধারনা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হবে।