আসন্ন পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পেয়ে ভোলায় আওয়ামী লীগ নেতারা গণপদত্যাগ করছেন। চরম ক্ষোভ ও দলের প্রতি অভিমান থেকেই তারা পদত্যাগ করছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ভোলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ছোটন প্রথম পদত্যাগ করেন। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ছোটন আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোলা সদর উপজেলা ২নং ইলিশা ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে নৌকা প্রতীক না পেয়ে নিজেকে বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ছোটনের পদত্যাগ ঘোষণা হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরই ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন নামে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও স্বেচ্ছায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দেন।এরপর, ভেদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোসলেউদ্দিন পাটোয়ারী, রাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল হক মিঠু চৌধুরী ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদসহ এ ৫ নেতাকর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া ওই ৫ নেতার কেউই আসন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাননি। তাই দল থেকে অব্যাহতি নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন তারা।দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া এ নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার রাতে ভোলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্রগুলো গ্রহণ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন।
পদত্যাগপত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, তাদের সবাই পারিবারিক অসুবিধা থাকায় উক্ত পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বলেন, দলীয় কোনো পদে থেকে দলের সীদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করা মানে দলীয় নীতিমালা ভঙ্গ করা। যদি কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় তখন মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের পরে কোনো দলীয় কর্মীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার নিয়ম নেই। তবে যারা এ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তাদের বিষয়ে দলীয়ভাবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে পদত্যাগ করা নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ইউনিয়নের জনগণ আমাদেরকে ভোটের মাঠে দেখতে চাওয়ার কারনেই আমরা ভোটযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চাই। কিন্তু দলের হয়ে ভোটের মাঠে প্রার্থী হিসেবে কাজ করার সুযোগই যেহেতু নেই, তাই দল থেকে স্বেচ্ছায় সরে গিয়ে জনগণের পাশে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। এতে করে দল আমাদেরকে ভুল বুঝলেও আমাদের পিছনে থাকা ইউনিয়নের জনগণ আমাদেরকে ভুল বুঝবে না।