ভারতে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে দেশে ফেরত এসেছে পাচার হওয়া ১৬ জন মেয়ে ও ২০ জন ছেলে সহ মোট ৩৬ জন।এদের মধ্যে অধিকাংশ কিশোর কিশোরী কিশোরী।সোমবার বেলা ৩ টার সময় ভারতের প্রেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন এর প্রথম সেক্রেটারি শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর উপস্থিতিতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এসময় হাই কমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।এরা আগে এরা বিভিন্ন সীমান্ত পথে দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচার হয় ভারতে।ফেরত আসারা হলো-সাতক্ষীরা জেলার বদর সরদার এর মেয়ে মাজেদা খাতুন (২৫) হাফিজুর এর মেয়ে হালিমা খাতুন (১৮) ঠাকুরগাঁও জেলার ভারত চন্দ্রর ছেলে নিত্য নন্দ রায় (১৬) রাজবাড়ি জেলার কুমারেশ বালার মেয়ে প্রিয়া বালা (১১) সুনামগঞ্জ জেলার আব্দুর রাজ্জাক এর মেয়ে আমেনা খাতুন (১৪)
বাগেরহাট জেলার রহিম খানের মেয়ে রহিমা খাতুন (১০) রুহুল আমিন এর ছেলে রাকিব হাওলাদার (২৩) আলআমীন এর ছেলে সোহলে (১৩) মাসুম শেখ এর ছেলে আবু শেখ (১৩) আজগর আলীর ছেলে শহিদুল (১৬) আব্দুস সলাম এর ছেলে রকিবুল ইসলাম (১৭) সুশান্ত মন্ডল এর ছেলে দিপু মন্ডল (১৪) মামুন হাওলাদার এর মেয়ে লাবনী আক্তার (১১) পিরোজপুর জেলার সালাম মৃধার মেয়ে মুক্তা আক্তার (১৬) নড়াইল জেলার ইকবাল হোসেন এর মেয়ে করুনা বিবি (১৭)
নাইম শেখ এর মেয়ে নিশা আক্তার (২২) ও তার ছেলে আবু বক্কার (১) রাজশাহী জেলার খায়রুল ইসলামের মেয়ে রুমী খাতুন (১৩) ফরিদপুর জেলার মকিম শেখ এর মেয়ে নার্গিস খাতুন (২০) যশোর জেলার মাসুম শেখ এর মেয়ে আয়েশা খাতুন (১৫) জাহিদুল ইসলাম মোল্যার মেয়ে জেসমিন আক্তার (১৫) সরোয়ার হোসেন এর ছেলে সাকিল হোসেন (১৩) মশিউর এর ছেলে রাকিব শেখ (১৬) আয়ুব আলীর ছেলে রুহুল হাসান (১৬)আব্দুল আলীম এর ছেলে সাকিব হাসান (১৬)
বরিশাল জেলার সেলিম এর জুয়েল সরদার (১৬) কুড়িগ্রাম জেলার হামিদুল এর ছেলে শাহজালাল (১৭) গোপালগঞ্জ জেলার মিলন সরদার এর ছেলে জব্বার সরদার (১৩) মুন্সীগঞ্জ জেলার বিজয় বায়দার ছেলে এরিন বায়দা (১৩) কুমিল্লা জেলা আব্দুল জলিল এর ছেলে শায়ন হোসেন (১৪) খুলনার সাত্তার হালদার এর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (১৪) জামাল গাজির ছেলে মোস্ত্ফা গাজী (১৫) আব্দুর রহমান গাজির ছেলে আবুল হাসান (১৬) জিয়ারুল ইসলাম এর ছেলে শিমুল ইসলাম (১১) বরুন মন্ডল এর মেয়ে আন্না মন্ডল (১৬) পিরোজপুর জেলার জিহাদ হোসেনের ছেলে জাহিদ হাসান (১৬)।
ফেরত আসা আমেনা বলেন,আমি আমার মায়ের সাথে ছোট বেলা থেকে ভারতের কোলকাতা শহরের হাওড়া এলাকায় থাকাতাম।সেখানে আমি ও আমার মা বাসা বাড়ির কাজের সময় পুলিশের কাছে ধরা পড়ি।তবে আমার মা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।আমি এখন কোথায় যাব কোন কুল কিনারা পাচ্ছি না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব বলেন,এরা দালালদের মাধ্যেমে বিভিন্ন সময় পাচার হয় ভারতের বিভিন্ন শহরে।সেখানে তারা নানা ধরনের কাজ করার সময় আটক হয় সেদেশের পুলিশের কাছে।এরপর আদালতের মাধ্যেমে তারা দেড় থেকে দুই বছর মেয়াদে জেল খেটে আজ দেশে ফেরত আসে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে।ইমিগ্রেশন এর আনুষ্টানিকতা শেষ করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন,ফেরত আসা বাংলাদেশী নাগরিকদের থানার আনুষ্টানিকতা শেষে যশোর রাইটস,এনডাব্লিউডি ও জাস্টিস এন্ড কেয়ার নামে বেসরকারী এনজিও সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে।জাস্টিস এন্ড কেয়ার এর ফিল্ড ফ্যাসিলেটেটর রোকেয়া খাতুন বলেন,পাচার হওয়া কিশোর কিশোরীরা বিভিন্ন সীমান্ত পথে পাসপোর্ট ভিসা বাদে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভারত পাচার হয়।
এরপর সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়ে জেল খানায় যায়।এরপর জেল থেকে একটি বেসরকারী এনজিও তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে।তারপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে আজ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মধ্যমে দেশে এসেছে।ইমিগ্রেশন ও থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে যশোর নিয়ে যাওয়া হবে।তারপর তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে হস্তান্তর করা হবে। এদের মধ্যে কেউ আইনি সহযোগিতা নিতে চাইলে তাকে আইনি সহযোগীতা দেওয়া হবে।
যশোর রাইটস এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় মল্লিক বলেন এসকল কিশোর কিশোরী বিভিন্ন ভাবে দালালদের মাধ্যমে পাচার এর শিকার হয়।এরা ভারতের কোলকাতাও আশে পাশের শহরে আটক হয় বিভিন্ন কাজের সময়।আমরা ভারতীয় এনজিও সংস্থার সাথে যোগাযোগের মাধ্যেমে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় তাদের দেশে ফিরে আনি।আমাদের যশোর হোমে নিয়ে এদের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব।