ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই ১৫ দিন হলো। বিল বকেয়া থাকায় গত ২২ জুন ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সরাইল বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ বিউবো। বর্তমান সরকার ইউনিয়ন পরিষদকে ডিজিটাল করতে অনেক ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে।এ জন্য চালু করা হয় ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র। আর ইউনিয়ন পরিষদের বেশিরভাগ কাজ এখন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকেই করা হয়।
এতদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।কিন্তু শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তথ্যসেবা কেন্দ্রের ফটোকপিয়ার, কম্পিউটার ও ক্যামেরাসহ সব বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্র অচল রয়েছে। এতে থমকে আছে ইউনিয়নের জরুরি কাজ। এদিকে,বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা।
কেউ কেউ দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরেও সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আবার অনেকেই পরিষদ কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় চেয়ারম্যানদের উদাসীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গাজী সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,বকেয়া বিল বাকি থাকার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পাশের বাড়িতে থেকে আমরা আপাতত কাজ চালাচ্ছি। তবে আশা করা হচ্ছে কয়েকদিনের মধ্যেই আবার বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হবে।
ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা ফাহমিদা আক্তার বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের কাজের খুব সমস্যা হচ্ছে। আমার বাড়ি পরিষদের পাশে তাই ঘর থেকে জরুরী কাজ করে দেওয়ার হচ্ছে। যাতে পরিষদে সেবা নিতে এসে কেউ ফিরে না যায়।
ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা মিনারা বেগম বলেন, এমন কথা প্রথম শুনতে হলো বকেয়া বিলে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে ৭ দিন ধরে ঘুরেও একটি কম্পিউটারাইজড ‘জন্ম নিবন্ধন’ নিতে পারিনি। এভাবে প্রতিদিন অনেক লোক সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার আলী রাজা বলেন, অনেকদিনের বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে। কিছুদিন আগে আমরা ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং করেছি চেয়ারম্যান কে বলেছি। বিদ্যুৎ নাই গরমে অফিসে বসা যায় না। মানুষ সেবা নিতে এসে তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে কথা শোনাচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদের আরেক সদস্য মেম্বার খরি বিলাস মজুমদার বলেন, বহুবছর আগের বকিয়া বিল জমা রেখেছে এই বিল আমরা কেন পরিশোধ করব চেয়ারম্যানকে মিটিংয়ে আমরা বলেছি। সেবাগ্রহীতারা ইউনিয়ন পরিষদের সেবা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। জন্মনিবন্ধনেরসহ সব কাজ করা যাচ্ছে না।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. আছমা বেগম বকেয়া বিলের বিষয়ে জিজ্ঞাস করলে বলেন, অনেক বছর আগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল, এ বকেয়া বিলের জন্যে বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের কাজ করতে একটু সমস্যা হচ্ছে। অনেক আগের তবে মানুষের যাতে কষ্ট না হয় বিদ্যুতের লাইন সংযোগ সচল করা চেষ্টা করছি।
সরাইল উপজেলা বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ বিউবো নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দু রউফ এ প্রতিনিধিকে বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের কাছে ২লাখ ৬২হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। গত২২ জুন যে কারণে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক তবে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। পরিষদে আসা জনগণ যাতে সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। এ ব্যাপারে দূরত্ব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।