মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ও বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র শিল্পপতি মহসিন মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি বিজয়ী হয়ে যতটুকু খুঁশি তার চেয়েও হাজার গুন বেশি আতংকিত তার সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে।
তিনি বলেন যারা ‘‘আমার বাসায়, এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করেছে, তাদের নামে থানায় মামলা দিলেও তারা প্রকাশ্যে পুলিশের সাথে এবং আশ-পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্টসহ কর্মী সমর্থক ও নেতাকর্মীরা অপরাধ না করেও মামলার আসামী হয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং পুলিশ তাদের খুঁজছে। এই হলো ক্ষমতার অপব্যবহার”।
গত রবিবার (২৮ নভেম্বর) রাতে ফলাফল ঘোষনার পর তার নিজ বাস ভবন মহসিন নিবাসে তাৎক্ষনিক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলছিলেন চতুর্থ বারের মতো নির্বাচিত হওয়া জেলা বিএনপি’র সদস্য, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র শিল্পপতি মহসিন মিয়া।
তিনি জানান, ‘‘আমাকে যারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে আমি আপনাদের গনমাধ্যমের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে তাদের নিরাপত্তা চাই। যাতে তাদের দলীয় ও সরকারের প্রভাব খাটিয়ে আমার জনগনের উপর যেন আক্রমন করা না হয়। জনগন চায় শান্তিভাবে বসবাস করতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি যেন না হয়, বাড়ি ঘরে যেন হামলা না হয়। কিন্তু আমি এই মূহুর্ত্বে অপারগ হয়ে যাচ্ছি এই কয়েক দিনের অবস্থা দেখে।
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে জয় পরাজয় থাকবেই। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জনগনের সেবা করার জন্যই মেয়র হতে চেয়েছিলেন, আমিও সেটাই চেয়েছি এবং চাইছি। জনগন আমাকে বেশি ভোট দেয়ায় আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। উনাকেও জনগন ভোট দিয়েছে। তাই জনগনের যে আশা আকাঙ্ক্ষা, আমরা দু’জন যদি মিলেমিশে কাজ করি তাহলে জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষা পুরন করে ও শান্তির শহর গড়তে সহজ হবে।’
তিনি শান্তিপুর্ন ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের সকল সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরো বলেন, নৌকা মার্কার প্রার্থী যদি আমার সাথে থেকে দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন, ন্যায়কে ন্যায়, অন্যায়কে অন্যায় বলেন তাহলে আমাদের এই পর্যটন শহরে আগামীতে আরো সুন্দর হবে। আমরা ভাল কাজে এক হতে পারি না কেন ? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, মেধাবীদের মূল্যায়ন করা না হলে মেধাবী জন্মাবে না। ভাল কাজে প্রশংসা না করলে ভাল কাজ যারা করে তারা উৎসাহ পাবে না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার বাগার সরানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ইচ্ছে করলে এক মিনিটেই সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেন। আমি বাগারের জন্য জমি কিনেছি, ক্রয়কৃত জমিতে বাওয়ান্ডারী করার জন্য কাজ শুরু করলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় গেইট লাগিয়ে বাঁধা দিয়ে মামলা করে কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি মামলা তুলে গেইটটা খুলে দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
সাংবাদিকেদের উদ্দ্যেশে মেয়র আরো বলেন, যারা শহরের ফুটপাত দখল করে, এলোপাতাড়ি ভাবে গাড়ি রেখে যানজট সৃষ্টি করে এবং যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে পর্যটন নগরীর সৌন্দর্য বিনষ্ট করে এদের ব্যাপারে আপনারা সহযোগিতা করলে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি চাই পর্যটন নগরীকে একটা পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে।
উল্লেখ্য: গত ২৮ নভেম্বর ১ম বারের মতো ইলেকট্রনিক মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হককে ৪৫৭ ভোটে পরাজিত করে তিনি পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি মোট ভোট পান ৫৯৮৯ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা মার্কার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দ্বারিকাপাল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক ৫৫৩২ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।