বাগেরহাটের শরণখোলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।এর মধ্যে ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং এক নারীসহ পাঁচ জনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজয়ী ও পরাজিত ইউপি সদস্যের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এছাড়া,উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে পরাজিত প্রার্থীর কর্মীদের দোকান ভাংচুরেরও অভিযোগ করেছেন তিন প্রার্থী।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৩টার মধ্যে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেজিস্ট্রারে ২০ জনের ভর্তির তথ্য পাওয়া গেছে।এছাড়া,বিভিন্ন এলাকায় আরো কমপক্ষে ১০জন আহত হয়ে বাড়িতে রয়েছেন।তারা প্রতিপক্ষের ভয়ে হাসপাতালে আসতে পারছে না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে।উপজেলার বগী,চালিতাবুনিয়া,দক্ষিণ সাউথখালী, বকুলতলা,দক্ষিণ রাজাপুর,গোলবুনিয়া ও লাকুড়তলা এলাকায় এসব হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এসব এলাকার মধ্যে সাউথখালী ইউনিয়নের বগী,চালিতাবুনিয়া ও বকুলতলা ওয়ার্ডে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল বলে জানা গেছে।সাউথখালী ইউনিয়নের ৮নম্বর চালিতাবুনিয়া ওযার্ডের বিজয়ী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খলিফা জানান,ফলাফল ঘোষনার পর রাতে যে যার বাড়ি যাওয়ার পথে পরাজিত প্রার্থী জাফর তালুকদারের কর্মীরা তার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।এতে ছয় জন আহত হয়।এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাইফুল ইসলাম রুবেল (৪১) ও মনির খানকে (৩৫) খুলনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।বাকিরা শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এব্যাপারে,প্রতিপক্ষে জাফর তালুকদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,মেম্বর জাহাঙ্গীর খলিফার লোকজনরাই আমার ৬-৭জন কর্মীকে মেরে আহত করেছে।সুলতান হাওলাদারের হাত ভেঙে গেছে।কিন্তু তাদের ভয়ে হাসপাতালে নিতে পারছি না।চালিতাবুনিয়া বাজারে আমার তিন কর্মী দোকান ভাঙচুর করেছে।সাত নম্বর বগী ওয়ার্ডের পরাজতি প্রার্থী হানিফ মুন্সির অভিযোগ,বিজয়ী মেম্বর রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও তার কর্মীদের ভয়ে তার কর্মীরা একপ্রকার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে।তাদের হামলায় আলী আজগর (৪৮) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
তার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে।তার কর্মী আবু সালেহর মাছের আড়ত ভাঙচুর করেছে রিয়াদুলের লোকেরা।তবে, রিয়াদুল পঞ্চায়েতের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।দুই নম্বর বকুলতলা ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলাম খান জানান,বিজয়ী দেলোয়ার হোসেন খলিলের লোকেরা তার তিন কর্মীকে মেরে আহত করেছে।এর মধ্যে রাজু মৃধাকে (২৪) খুলনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।এছাড়া,তিন কর্মীর দোকান ভাঙচুর করেছে তারা।
দোকানপাট ভাঙচুরের অভিযোগের সঠিক নয় দাবি করে মেম্বর দেলোয়ার হোসেন খলিল বলেন,দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে।পরবর্তীতে এধরণের ঘটনা যাতে না ঘরে সেব্যাপারে আমার কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান জানান,নির্বাচন পবর্তী টুকটাক সংঘর্ষের খবর শোনা গেছে।এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি।সাউথখালী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা একটু ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় সেখানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।