যশোরের অভয়নগরে ফুটপাত দখলমুক্ত না করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক চায়ের দোকান-সহ বিভিন্ন মহলে উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। গত ২৪ নভেম্বর (বুধবার) বিকালে নওয়াপাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাত দখল করে যত্রতত্র গড়ে ওঠা দোকানপাটে জরিমানা করা নিয়ে এ সমালোচনার চলছে।
আলোচনায় বিষয়বস্তু হয়ে ওঠেছে সড়কের পার্শে বসা অসহায় জুতা সেলাই করা এক মুচিকে ৪২০ টাকা জরিমানা করা-কে কেন্দ্র করে। বাজার এলাকা ঘুরে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আমিনুর রহমান’র উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন, সহকারী কমিশনার ( ভূমি) তানজিলা আখতার। এসময় বেশ কিছু ফুটপাত দখলকারীকে জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। ৩ – ৪ ফুট ফুটপাত দখলকারী বড় ব্যবসায়ীদের ২০০, ২৫০, টাকা জরিমানা করা হয়, এবং রাস্তার এক পার্শে বসা মুচিকে জরিমানা করা হয় ৪২০ টাকা।
ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানার আদায়ের সংবাদ পেয়ে সেখানে জাতীয় সপ্তাহিক কর্মক্ষেত্র পত্রিকার অভয়নগর সংবাদদাতা মোঃ কামাল হোসেন উপস্থিত হয়ে ছবি তুলতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার দায়িত্ব কর্তব্য পালনে বাঁধা সৃষ্টি করে, এবং তার সাথে অশালীন আচারণ শুরু করেন।
এ বিষয়ে জুতা সেলাই করা (মুচি) প্রদীপ দাস বলেন, আমি রাস্তার কোনায় বসে জুতা সেলাই করি এ কর্মের উপর’ই আমার সংসার চলে কাল সারাদিন ২২০ টাকা উপার্জন করেছিলাম। আমাকে জরিমানা করা হলো ৪২০ টাকা আমি অনেক আঁকুতি মিনতি করে তাদের অনুরোধ করেছিলাম আমাকে ক্ষমা করতে। ভেবেছিলাম স্যারেরা শিক্ষিত লোক তারা আমার দুঃখটা বুঝবে কিন্তু তারা বুঝলোনা বরং নির্দয়ের মতো জরিমানার টাকা আদায় করল। আমি ভগবানের কাছে বিচার দিয়েছি তিনিই এর বিচার করবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পথচারীরা বলেন , প্রায়’ই নওয়াপাড়া বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবসায়ীদের জরিমানার করা হয়। তবে ফুটপাত দখল মুক্ত করতে কোন কার্যক্রম দেখা যায় না। গত ১৪ নভেম্বর রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা দখল মুক্ত করতে ৩ দিনে আল্টিমেটাম দেওয়া হয় কিন্তু অদৃশ্য কারণে ১২ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
নওয়াপাড়া বাজারের গার্মেন্টস পট্টি,জুতাপট্টি, চুড়িপট্টি গুরুহাটা, ভূষিপট্টি সহ কাঁচাবাজেরে সড়কগুলো দখলদারদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে চুড়িপট্টি’র ১৬ ফিট রাস্তা আজ ৪ ফিট হয়ে গেছে। এ সকল ফুটপাত দখল মুক্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন ভূমিকা দেখা যায় না জরিমানা করে জনগনের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না কাজেই আমরা জরিমানা নয় দখল মুক্ত ফুটপাত চাই।
উপরোক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, জরিমানার বিষয়টি আমার জানা নেই। জরিমানা বিষয় জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি)-র সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিলা আখতার বলেন, ইতিপূর্বে জুতা সেলাই করা ব্যক্তিকে সতর্ক করা হলেও তিনি ফুটপাত দখল করে কাজ করছিলেন । সে জন্যই তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে।