টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সুমাইয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। স্কুলছাত্রী প্রেমিকা সুমাইয়াকে হত্যার পর প্রেমিক মনির নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ওই স্কুলছাত্রীর পাশেই রক্তাক্ত আহত অবস্থায় মনির পড়ে থাকায় বিষয়টি অন্য দিকে মোড় ঘোরায়। দিন শেষে টাঙ্গাইলের র্যাব সদস্যরা বিষয়টির রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন।
এঘটনায় আহত মনির মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাব হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে তাকে আদালতে তোলা হবে।বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাতে টাঙ্গাইলের র্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার শামসুল হক কলেজের সামনের একটি ভবন থেকে সুমাইয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযুক্ত প্রেমিক বাস হেলপার মনির উপজেলার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। সে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তারা এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল।র্যাব কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার সঙ্গে মনিরের দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত দুই মাস আগে সুমাইয়া মনিরকে বাদ দিয়ে অন্য এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি মনির সহ্য করতে পারছিল না। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে মনির সুমাইয়াকে মারধর করে। কোচিংয়ে যাওয়ার সময় একপর্যায়ে মনির ক্ষোভে সুমাইয়াকে একটি ভবনের নিচতলা নিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে।’
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নিহত স্কুলছাত্রীর পাশেই মনির আহত অবস্থায় পড়ে ছিল। বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থল থেকে ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা মনিরের দুটি ভিডিও পেয়েছি। ছুরিটি স্পেশাল, ওটা চাপ দিলেই দুই দিক থেকে দুটি ছুরি বের হয়। আমাদের ধারণা ছিল- এই ছুরির মালিকই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মনিরের পূর্বের ভিডিওতে এই ছুরি দেখা গেছে। গতকাল মনির তার বন্ধুদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসে অস্ত্রের কথা বলেছে। সেখানে বসে মনির ড্রিংকসও করেছে। পরে মনির ওই স্কুলছাত্রীকে হত্যা করে নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এখন মনির নিজেই মৃত্যুশয্যায় রয়েছে। পরে বিষয়টির বিস্তারিত জানানো হবে।’
এদিকে নিহত সুমাইয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের কান্না আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। সুমাইয়ার পরিবার অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।