চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নীলফামারী সৈয়দপুর উপজেলায় নৌকা প্রতীক নিয়ে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মাত্র ৯৩ ভোট পেয়ে রেকর্ড করেছেন। উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত ও আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন সরাসরি দল ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার মনোনয়ন প্রাপ্ত এই প্রার্থী।
এতে দেশজুড়ে নৌকার প্রার্থী হয়ে সর্বনিম্ন ভোট প্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন তিনি। ফলে দেশের চাঞ্চল্যকর ইতিহাস সৃষ্টকারী এই নারীকে নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় চলছে এলাকায়।
দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে নৌকার প্রার্থীর সর্বনিম্ন ভোট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একের পর এক রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে চলমান ইউপি নির্বাচনে। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ার বিল ইউনিয়নে জান্নাতুল বকেয়া রেখা ৯৯ ভোট পেয়ে প্রথম রেকর্ড করেন এক্ষেত্রে।
কিন্তু তাকে পিছনে ফেলে প্রথম হয়েছেন একই উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল। তিনি পেয়েছেন মাত্র ৬৭ ভোট। তার সাথে সহযাত্রী হয়েছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাসিনা বেগম। তিনি ৯৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করায় প্রথম হওয়া রেখাকে নিয়ে গেছেন তৃতীয় অবস্থানে।
ইউনিয়ন আ’লীগের সদস্য নজু বলেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আজম আলী সরকারের স্ত্রী ও ইউনিয়ন আ’লীগের ১ নং ওয়ার্ড সভাপতি হাসিনা বেগম কে নীলফামারী জেলার সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম এর সুপারিশের প্রেক্ষিতে মনোনয়ন প্রদান করেন।
অথচ আমরা তৃণমূল থেকে প্রার্থী দিয়েছিলাম সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোখলেছুর রহমান সরকারের ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন সরকারের ছোট ভাই যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানা পাইলট কে।
তৃণমূলের মতামত কে উপেক্ষা করে একজন অযোগ্য প্রার্থীকে নৌকা দেয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাদের অনুরোধেই বিদ্রোহী প্রার্থী করা হয় পাইলট বাবুকে। যে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী কে পরাজিত করেছেন বিপুল ভোটে।
আনিসুল হক নামে একজন জানান, হাসিনা নৌকার প্রার্থী হলেও মূলতঃ কাজ করেছে জুয়েল চৌধুরী হয়ে। কারণ তার নির্বাচনী খরচ দিয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান। একারনে ভোটের মাঠে উপস্থিতি লোক দেখানো। তাছাড়া ভোটের ২ দিন আগে থেকেই হাসিনা ছিল নিরব।
মহিলা এমপি এবং পৌর ও উপজেলা আ’লীগের নেতারা তার সাথে থাকলেও দলের স্থানীয় কর্মী সমর্থকসহ সাধারণ ভোটাররা তার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় এমন ভরাডুবির ঘটনা ঘটেছে। ইতোপূর্বে ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী মেম্বার হলেও হাসিনা ও তার স্বামী আজম আলীর বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য এলাকায় তাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই।