নীলফামারীর সৈয়দপুরে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে জোরপূর্বক জায়গা দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।পুলিশকে অভিযোগ দেয়ায় প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে ভুক্তভোগীকে।এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করায় দখলদাররা নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শণসহ হয়রানী করে চলেছে।এমন অভিযোগ করেছেন সৈয়দপুর শহরের নয়াটোলা মহল্লার কেফায়তুল্ল্যা রোড নিবাসী মৃত আশরাফের ছেলে শেখ জসিম।
তিনি জানান,নয়াটোলা এলাকায় কবলামূলে ২.৫০ শতক জমি কিনে চারদিকে পাকা বাউন্ডারী ওয়াল দিয়ে ভোগদখল করছি।যার তফশীল হলো মৌজা-কয়া,জে.এল নং-০৭,খতিয়ান নং ১২৬৫২,দাগ নং ৬৯৯৭।যা ইতোমধ্যে আমার নামেই খারিজ ও রেকর্ডভুক্ত হয়েছে এবং নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছি।জমি কেনার আগে থেকেই ওই জমিতে বিভিন্ন জাতের বড় ছোট গাছপালা ছিল।
বেশ কিছুদিন থেকে ওই জমির পাশে বসবাসকারী মোস্তাকিম লোভের বশে কিছু কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জমিটি তার নিজের বলে দাবী করছে।সেমতে জমিটি জবর দখল করার পায়তারা করে আসছে।এমতাবস্থায় গত ৩১ আগস্ট দুপুর আনুমানিক ৩ টার দিকে আমার উক্ত জমির গাছ বিক্রির জন্য কাটার সময় মোস্তাকিম,তার মেয়ে ও জামাইসহ অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে এসে জমি তাদের বলে দাবি করে গাছ কাটতে বাধা দেয়।
এর প্রতিবাদ করলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারমুখি হয়ে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করে।হট্টগোল শুনে আশেপাশের লোকজন আসলে তাদের সামনেই মোস্তাকিম গংরা চিৎকার করে বলতে থাকে যে কোন মূল্যে তারা ওই জমি দখল করবে।আমি যদি আবারও ওই জমিতে যাই বা গাছ কাটা অথবা স্থাপনা তৈরীর চেষ্টা করি তাহলে তারা আমাকে মারপিট সহ আমার নামে মিথ্যে মামলা করে হয়রানী ও আর্থিক খরচ করাবে।
এতে আমি তাদের কথার প্রতি উত্তর দিতে গেলে মোস্তাকিমের জামাই আরমান নিজেকে জেলা যুবলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক পরিচয় দিয়ে হুমকি দেয় যে বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলবে।এরপর সেদিনই সৈয়দপুর থানায় এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ দিলে এসআই নয়ন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন কিন্তু আজাবধি আমার অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়নি।অথচ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর মোস্তাকিম পাল্টা মিথ্যে অভিযোগ দিলে তা গ্রহণপূর্বক বিষয়টি মিমাংসা করে নেয়ার জন্য আমাদের উপরই চাপ প্রয়োগ করছেন।
আর সেই সুযোগে মোস্তাকিম গংরা জমির পশ্চিমাংশের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে অবৈধভাবে প্রবেশ করে দক্ষিনের গেটে ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে জমিটি জবর দখল করেছে।এ ব্যাপারে মোস্তাকিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান,ডাঃ আব্দুল্লাহর বাবার কাছ থেকে ১৯৭০ সালে ৬ শতক জমি কিনে নিয়েছেন আমার বাবা।পৈত্রিকসূত্রে বর্তমানে আমিই ওই জমির মালিক।৬ শতক আমাকে বুঝিয়ে দেয়া হোক।এরপর যদি কোন জমি বাকি থাকে তা যেই নিক তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
তিনি বলেন,ইতোপূর্বেও ডাঃ আব্দুল্লাহ জোরপূর্বক আমার ২শতক জমি জবর দখল করে।এতে বাধা দিলে মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাকেসহ আমার স্ত্রী ও মেয়েকে জেল খাটিয়েছে।পরে ওই মিথ্যে মামলায় আমরা বেকসুর খালাস পাই।আমার পুত্র সন্তান না থাকায় এবং আমি দরিদ্র হওয়ায় গায়ের জোরেই তখন সীমানা প্রাচীর দিয়ে জমিটি তার দখলে নেয় ডাঃ আব্দুল্লাহ।পরে তিনি তা কায়সারের নিকট এবং কায়সার বিক্রি করে শেখ জসিমের কাছে।কিন্তু আমি জানিনা কিসের ভিত্তিতে তিনি ওই জমি বিক্রি করেছেন এবং তারাও কিনেছেন।
মোস্তাকিমের জামাই আরমান বলেন,জমি আমাদের দখলে।দেখি কে কিভাবে এই জমি দখল করে।শেখ জসিম যদি প্রকৃতই জমি কিনে থাকে তাহলে যার কাছে কিনেছে তার কাছ থেকেই জমি বুঝে নিক।এসময় আরমানকে প্রশ্ন করা হয় যে,জমিটি কেনার পর সীমানা প্রাচীর দিয়ে নিজ দখলে নেয়ার সময় কেন আপনারা বাধা দেননি বা প্রশাসনের সহযোগিতা নেননি।এখন জমিটিতে স্থাপনা নির্মাণ করার প্রাক্কালে এভাবে বাধা দেয়া কতটুকু যুক্তিসংগত?
এতে আরমান বলেন,তখন আমার বিয়ে হয়নি।শ্বশুর মোস্তাকিমকে অসহায় ও দূর্বল পেয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও এলাকার কতিপয় লোকজন টাকার বিনিময়ে অন্যায়ভাবে জমিটিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করিয়েছেন।আদতে এই জমির কানাকড়িও আব্দুল্লাহ ডাক্তার বা শেখ জসিম পাবেনা।এখন আমি আছি।কোনভাবেই এই পরিবারের উপর অন্যায় অত্যাচার হতে দিবোনা।কার কত ক্ষমতা আছে দেখি।
শেখ জসিম জানান,জমিটির প্রকৃত মালিক ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী রাহেলা চৌধুরী।ওয়ারিশসূত্রে পরবর্তীতে এর মালিক হন মনজের আলম রোমেল।তিনি বিক্রি করেন কায়সার খানের কাছে।তার কাছ থেকেই আমি কিনেছি।অথচ মোস্তাকিম গংরা ডাঃ আব্দুল্লার জমি বলে দোহাই দিয়ে অহেতুক এই জমিতে তাদের অংশ দাবি করছেন।