পাট জাগের পানির অভাবে ডোবা-বিল ও পুকুর-নালার খোঁজে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছেন পাট চাষীরা।কৃত্রিম খাল তৈরি করে সেচের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন তারা, এতে পাট চাষীদের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে। কেউবা বাড়ির পাশের ছোট পুকুরটিতে মাছ চাষ বাদ দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন।এ বছরে নাটোরের লালপুরে পাটের ফলন ও দাম ভালো হলেও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চাষীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, ধোয়া এবং শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এবার পাটের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় পাট চাষিরাও খুশি। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে।
চাষীরা জানান, পাট চাষের জমি উপযোগী করা থেকে নিড়ানি দেওয়া, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আঁশ আহরণ ও শুকানোতে শ্রমিকের মজুরি খরচ অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি পড়ছে। এবার অধিক পরিমাণে পাটের চাষ হওয়ায় পানি সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৮ মণ পাট হবে। পাট জাগের পানির অভাবে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে গাড়িতে করে পাট জাগ দিতে নেওয়া হচ্ছে। পরিবহন খরচ গাড়ি প্রতি হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে। ন্যায্য মূল্য পেলে লাভবান হবেন তারা। পাটের বর্তমান বাজার ২২ থেকে ২৫ শ টাকা মণ চলছে, দাম কমে গেলে চাষীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে পাট চাষে বিভিন্ন পরামর্শসহ মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাট চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। চাষিদের বিনা মূল্যে পাট বীজ ও রাসায়নিক সার প্রদানসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে পাট চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। এ বছর উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। তুলনামূলকভাবে গত বছর পাট চাষের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর। প্রতি বছরই পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।