করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নওগাঁয় শুরু হয়েছে সরকার ঘোষিত ১৪দিনের কঠোর বিধিনিষেধ।এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নওগাঁয় মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিজিবি।কঠোর বিধিনিষেধ সফল করতে জেলা প্রশাসনের ৩৪টি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং শহরের গুরুত্বপূর্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।ব্যাটারী চালিত অটোচার্জার, চার্জার ভ্যান সীমিত পনিমান চলাচল করতে দেখা গেছে।
এছাড়াও যারা অযথা রাস্তাঘাটে চলাচল করছে তাদের পুলিশি নানান জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।বন্ধ আছে সকল ধরনের দোকানপাট, শপিংমল ও বিপনী বিতান।করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে আজ ( শুক্রবার ) পর্যন্ত নওগাঁয় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে ১১৪জন মৃত্যুবরন করেছেন। মোট আক্রান্ত হয়েছে ৫হাজার ৬শত ২৬জন।ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ দিন লকডাউন শিথিলের পর করোনা সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন)।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নওগাঁয় কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর ভাবে পালিত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশী চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ম্যাজিষ্ট্রেটের ভ্রাম্যমান আদলত, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার বিভিন্ন এলাকায় থাকলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে ছোট যানবাহনের পাশাপাশি কিছু মানুষের চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে অনেকেই পুলিশের জেরার মুখে পরতে হয়েছে ।
দোকানপাট ও গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় রিকশা, মোটরসাইকেল, কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে অনেককে যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের বেশির ভাগই ঈদ উদযাপন শেষে সকালে শহরে পৌঁছেছেন। বিভিন্ন স্থানে চলাচলরত গাড়িকে থামিয়ে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে।
শহরের তাজের মোড়ে পথচারী রুবেল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার ছোট ছেলে খুব অসুস্থ তাই ব্যাধ্য হয়ে ঔষধ নিতে এসেছি। এসে দেখি রাস্তাঘাট ফাঁকা। ঔষধ নিয়েই বাড়ি ফিরে যাব।শহরের রুবির মোড়ে রিকসা চালক মোঃ মুন্টু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বাপো পেটের দায়ে রাস্তাত বের হছি। গরীব মানুষ রিকসা না চালালে খামু কি। ভয়ও লাগিচ্ছে যদি পুলিশ ধরে। তারপরও অনেকে তো জরুরী কামোত বের হয়। তারকোক রিকসাত লিচ্ছি। তয় ভাড়া বেশি মারবার পারিচ্ছিনা বাপো। যেডাই হয় সেডাই লিয়া সন্ধ্যাত বাড়িত যামু।
এদিকে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে জেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্ন্নান মিয়া, বিপিএম। এসময় পুলিশ সদস্যদের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে বিভিন্ন দিক দির্দেশনা প্রদান করেন। সেই সাথে রাস্তায় চলা চলকারী পথচারিদের খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানান।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া,বিপিএম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সরকার যতদিন চাইবে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কাজ করে যাবে। জনগনের কথা ভেবেই সরকার আবারও কঠোর লকডাউন দিয়েছেন। রাষ্ট্র জনগনের জন্য কাজ করেন, জনগনের ভালোর জন্যই কঠোর লকডাউন ঘোণনা করা হয়েছে। সকাল থেকেই পুরো জেলায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।জেলার সকল থানার ওসিদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে। জেলায় পুলিশের ১১০০জন পুলিশ সদস্য কাজ করছে লকডাউন বাস্তবায়নে।
এছাড়া ১৫০জন পুলিশ রিজার্ভ রয়েছে। আগামী ১৪দিনের কঠোর লকডাউন পালনে পুলিশ মাঠে থাকবে। লকডাউন বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন পুলিশ সুপার।উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ রোধে শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) চলছে। চলবে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত।