নওগাঁর মান্দায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার পর আসামিরা জেলহাজত থেকে বেরিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী মামুন রশিদ প্রামাণিক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়,জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৭/০৯/২০ সালের দুপুরে মান্দা থানার কালিকাপুর ইউনিয়নের চকগৌরি গ্রামে বয়েজ উদ্দিন (৬৫) এর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অনাধিকার প্রবেশ করে পাঁচ ব্যক্তি।তারা হলেন-একই গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে সুলতান প্রামাণিক (৩৫),মৃত জেহের আলীর ছেলে হবিবর রহমান প্রামাণিক (৫৫) ও আব্দুল হাকিম (৫৮),দেলুয়াবাড়ী গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (৩৬) এবং রাজশাহীর বাগমারা থানার পারদামনাশ গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জব্বার (৩৬)।
এরপর বিদ্যুৎ হোসেনের নেতৃত্বে বৃদ্ধ বয়েজ উদ্দিনকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি দুইদফা মারধর করে।এতে বৃদ্ধ বয়েজ উদ্দিন নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।হামলাকারীরা ও বয়েজ উদ্দিন সম্পর্কে আত্মীয়স্বজন।বিষয়টি দেখে বৃদ্ধর ছেলের স্ত্রী আফরোজা বেগম সাহায্যের জন্য ডাক চিৎকার দেন।এসময় বৃদ্ধর স্ত্রী আলতাফুন,ছেলে আব্দুল মান্নান,তার স্ত্রী মোরশেদা এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
প্রতিবেশীর সহযোগীতায় গুরুত্বর আহতাবস্থায় বৃদ্ধ বয়েজ উদ্দিনকে উদ্ধার করে দুপুর ২টার দিকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে।ঘটনায় নিহতের ছেলে মামুন রশিদ প্রামাণিক বাদী হয়ে ওই পাঁচজন ব্যক্তিকে আসামী করে ওইদিনই থানায় মামলা দায়ের করেন।মামলা নং-৪৬৭/২০। মামলার পর পুলিশ আসামী সুলতান প্রামাণিক ও হবিবর রহমান প্রামাণিককে আটক করে জেল হাজতে পাঠায়।তারা ছয়মাস হাজতবাস করে বেরিয়ে আসে।
আর বাঁকী তিনজন আসামী পলাতক ছিল এবং মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর তারা জামিন নেয়।বাদী মামুন রশিদ প্রামাণিক বলেন,আসামীরা জামিনে বেরিয়ে আসার পর মামলা তুলে নিতে এবং জমিজমা দখলে নিতে হুমকি অব্যহৃত রেখেছে।তারা ঘরের দেওয়ালের পাশে জোর করে নালা কেটেছে। বর্তমানে স্ত্রী,সন্তান ও পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে।জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় দুইবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দিয়েছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হবিবর রহমান প্রামাণিক বলেন,জেলহাজত থেকে বেরিয়ে আসার পর তাদের সঙ্গে কোন ধরনের কথা হয়না।সেখানে হুমকি দেওয়ার কোন প্রশ্নই আসেনা।বরং বাদী মামুন রশিদ প্রামাণিক আমার জায়গা দখল করে তার বাড়ির ইটের প্রাচীর দিয়েছে।তার বাড়ির পানি নেমে যাওয়ার জন্য নালা (ড্রেন) করেছি।
মান্দার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন,যখন মামলা তদন্তাধীন ছিল তখন আসামীপক্ষরা বাদীকে গালিগালাজ করত বলে শুনেছি।তবে জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বার বার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি এবং অবগত করেনি।এছাড়া লিখিত কোন অভিযোগ থানায় দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই।