নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় এক কৃষককে চলতি আমন মৌসুমে ৩০ বিঘা জমির ধান রোপন করতে দেয়নি প্রতিপক্ষ।এর ফলে ঐ মাঠে সকল জমিতে আমন ধান রোপন সম্পন্ন হলেও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিগুলো সম্পূর্ন পতিত পড়ে রয়েছে যা থেকে কমপক্ষে সাড়ে ৭শ মন ধান উৎপাদিত হতো।প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ার কারনে বদলগাছি থানায় অভিযোগ দায়ের করেও কোন সহযোগিতা পাননি ঐ কৃষক।
বরং প্রতিপক্ষরা জোরপূর্বত ধান লাগতে এরে বাধা দেয়ায় মহিলাসহ তিনজনকে বেদম মারধর করে।জানা গেছে,উপজেলার গাবনা গ্রামের কৃষক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস গংদের স্থানীয় গোনাগাড়ি ও চক কাবলা মৌজায় প্রায় ৩০ বিঘা সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন।কিন্ত অতি সম্প্রতি ঐসব সম্পত্তির অংশিদার দাবী করে বসে আব্দুল কুদ্দুসের ফুফাতো ভাই একই গ্রামের জালাল হোসেন,জাকারিয়া হোসেন ও আবু মাসুদ ঋষি।
আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন,তাদের দাদা মৃত ফয়েজ আলী দেওয়ান ১৬ নং অসিয়তনামা দরিলমুলে সমুদয় সম্পত্তি দুই পুত্র ইব্রাহীম ও শামসুদ্দিন দেওয়ান, ৪ কন্যা ও স্ত্রীর নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হয়।পরবর্তীতে কন্যারা এবং স্ত্রী তাঁদের অংশের সম্পত্তির যার মত ভোগ দখলে নেন।পরবর্তীতে শামসুদ্দিন তার সম্পত্তি পুত্র ও নাতিদের নামে ২৭৪০ ও ২৭৪১ নম্বর হেবাবীল এ্যাওয়জ দলিল মুলে রেজিষ্ট্রি করে দেন।
সেই থেকে ঐ সম্পত্তি মোঃ আব্দুল কুদ্দুসরা ভোগ দখল করে আসছেন।কিন্তু হঠাৎ করে ঐ সম্পত্তির মালিকানা দাবী করে নানাভাবে হয়রানী করতে থাকে।সম্পত্তি দখলের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে থাকে।এর প্রেক্ষিতে আব্দুল কুদ্দুস বদলগাছি সহকারী জজ আদালতে ২১/২০২১ নম্বর মোকর্দ্দমা দায়ের করলে আদালত গত ২০/০৬/২০২১ তারিখে দেয়া এক রায়ে উক্ত সম্পত্তি যেমন আছে তেমনই ভোগ দখল বলবৎ থাকবে মর্মে স্থিতাবস্থা জারী করেন।
সেই আদেশ বলে সম্পত্তি ভোগদখলরত আব্দুল কুদ্দুসদের দখলেই রয়ে যায়।কিন্ত আদালতের আদেশ অমান্য করে কেবলমাত্র গায়ের জোরে সম্পত্তি দখলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।এই ধারাবহিকতায় প্রতিপক্ষরা ঐসব সম্পত্তিতে হালচাষ করতেক দেয়নি।হালচাষ করতে গেলেই নানা হুমকী প্রদর্শন করে।এমন কি হাল চাষ করার জন্য জনবল ঠিকঠাক করলে তারা কামলা লোকদেরও নানাভাবে মারধরের হুমকী প্রদর্শন করে।
ভয়ে কেউ জমিতে শ্রম দিতে আসতে রাজী হয় না।ফলে এখন পর্যন্ত ঐসব বিবদমান ৩০ বিঘা জমিতে চাষ দেয়া বা ধান লাগানো সম্ভব হয় নি।উল্টো গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় প্রতিপক্ষ জালাল দেওয়ান,জাকারিয়া হোসেনসহ লোকজন নিয়ে ঐ সমস্পত্তিতে হালচাষ দিয়ে ধান রোপনের উদ্যোগ নেয়।এতে বাধা দিতে গেলে তারা আব্দুল কুদ্দুস,তার স্ত্রী মোছাঃ ফাহমিদা আক্তার এবং তাদের ভাতিজা আবু হুরায়রাকে বেদম মারধর করেছে।
এ ব্যপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে অভিযোগ নেয়ার পরিবর্তে উল্টো তাদেরই নানাভাবে হুমকী দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।উল্লেখ্য এই সম্পত্তি নিয়ে উক্ত আব্দুল কুদ্দুস বহুবার থানায় অভিযোগ করেও কোন সুবিধা পাননি বরং নিগৃহিত হয়েছেন।বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলে সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে।এমন কি খুনের মত ঘটনাও ঘটে যেতে পারে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।