নওগাঁর পোরশায় পাঁচটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (ভোররাতে) উপজেলার ভবানীপুর ও শরিওয়ালা গ্রামে মোট ৫টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভবানীপুর গ্রামের ৩টি মন্দিরের মধ্যে কালি মন্দিরে ১ প্রতিমা, সন্যাস মন্দিরে ৩টি এবং মনসা মন্দিরে ১টি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে এবং সরিয়াল গ্রামের লক্ষী মন্দিরে ২টি এবং মনসা মন্দিরে ১টি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। স্থানীয় ভবানিপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌতুম কুমার সাহা বলেন, আমাদের দুটি গ্রাম পাশাপাশি দুটি গ্রামের ৫টি মন্দিরের ৮টি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। কে বা কারা করেছে জানিনা। তবে ভোর রাতের দিকে ভাংচুর হয়ে থাকতে পারে। যারাই এই ঘটনার সাথে জড়িত থাক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনার জোড় দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে পোরশা উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুদেব সাহা জানান, ধারনা করা হচ্ছে আজ ( মঙ্গলবার ) ভোর রাতে ভবানীপুর গ্রামে কোনো এক সময় পৃথক দুটি মন্দিরে ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। মন্দির দুটিতে রাখা শ্রীশ্রী কালী, শিব, লক্ষ্মীসহ কয়েকটি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়। আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়ার পর থানায় জানানো হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানান সুদেব সাহা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখার সহ-সভাপতি বিমান কুমার সাহা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি । এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিউল আজম খান, বলেন, উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের দুটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। আমরা দুপুরের দিকে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটির সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান বলেন, ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইন এর আওতায় আনা হবে। কোনোক্রমেই এসব ঘটনার আসামিদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যেই পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম শুর করেছে। পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) মো. নাজমুল হামিদ রেজা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তারা দেখছেন। ভালভাবে যাচাই বাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তারা জানান।
উল্লেখ্য, দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়। এরপর রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।