1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
দিনে দুপুরে অবৈধভাবে পুড়ছে কাঠ,ফসলি জমি হুমকির মুখে
বাংলাদেশ । রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দিনে দুপুরে অবৈধভাবে পুড়ছে কাঠ,ফসলি জমি হুমকির মুখে

রুহুল আমিন:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৭০৬ বার পড়েছে

নওগাঁর মান্দায় ইটভাটার মালিকরা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পার্শ্বে ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে লাইসেন্সবিহীন প্রায় ২৮টি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। এসব ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের কেনো ছাড়পত্র নেই। হঠাৎ কয়লার দাম বাড়তি হওয়াই স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দেদারছে লাকড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এছাড়া দেশের সকল বনভুমি উজার করায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩তে বলা হয়েছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা অর্থাৎ জিগজ্যাগ ক্লিন, হাইব্রিড হফম্যান ক্লিন, ভার্টিক্যাল শফট ক্লিন, টানেল ক্লিন বা অনুরোপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এছাড়া আবাসিক, জনবসতি, সংরক্ষিত এলাকার বনভূমি ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা করা যাবে না। সরকারি বনাঞ্চলের সীমারেখা থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বে করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা চালু করা যাবে না।

আর এ আইন অমান্য করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। আর এসব ইটভাটা তদারকি করার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বন বিভাগ, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তাদের রহস্যজনক নীরবতার কারণে মান্দার অধিকাংশ ইটভাটা মালিক এসব আইনের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দেদারছে তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাটা মালিকরা ভাটার আশাপাশে মাটি দিয়ে ইট তৈরি করে ফসলী জমির টপসয়েল শেষ করে ফেলেছেন। বর্তমানে এ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় মাটি কিনে সেসব মাটি এক্্র-কেভেটর (ভ্যাকু) দিয়ে কেটে ড্রাম ট্রাক দিয়ে ভাটায় এনে ইট তৈরি করছেন। ফলে এলাকার রাস্তাঘাট হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে মান্দা উপজেলায় গিয়ে দেখা গেছে, সাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বে ২টি ইটভাটা রয়েছে ওই গ্রামের আঞলিক সড়কের পার্শ্বে অবৈধ মেসার্স মতিন (হাওয়া) বিক্স নামে ইট ভাটার ভিতরে অবৈধ ছ মিল স্থাপন করা হয়েছে। নামে মাত্র (হাওয়া ভাটা) ভেতরে চলছে খড়ি পোঁড়ানোর মহোৎসব। লাইসেন্সবিহীন তাদের এসব ইটভাটার চারপাশে মজুত করে রাখা হয়েছে হাজার মন লাকড়ি। ভাটাতে লাকড়ি পোড়ানোর ফলে ইটের চিমনি ও ড্রাম চিমনি দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আর সেই ধোঁয়া স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বসতি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মান্দা উপজেলার মইনম, বাঁকাপুর, প্রসাদপুর বাজার, চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৮টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার কোনোটিরই হালনাগাদ লাইসেন্স নবায়ন বা পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটাতে ৩ থেকে ৪ ধরনের ফরমা ব্যবহার করা হয়। এতে ইটের সাইজ ছোট-বড় করে প্রতিনিয়তই ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইটভাটা মালিক জানান, মান্দার কোনো ভাটারই লাইসেন্স নেই। কীভাবে চলে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও বন বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টর ম্যানেজ করেই ভাটা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। আর এসব ম্যানেজ করে থাকেন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি।

মতিন ব্রিকসের মালিক ও ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান (মকে) জানান, মান্দায় প্রায় ২৮টি ইটভাটা রয়েছে। এদের মধ্যে কোনোটারই লাইসেন্স নেই। সারা বাংলাদেশে যেভাবে চলছে এখানেও সবদিক ম্যানেজ করেই বরাবর যেভাবে চালানো হয়ে থাকে, এ বছরও সেভাবেই ভাটাগুলো পারিচালিত হয়ে আসছে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক জানান, ২০২২ সালে এ পর্যন্ত মান্দায় কেনো ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে অভিযানের মাধ্যমে এসব ভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী (পিএএ) জানান, খোঁজ খবর নিয়ে অভিযানের মাধ্যমে এসব ভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD