উজানে ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নীলফামারীর তিস্তা ব্যারেজ পয়ন্টে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।পানির তোড়ে ভেঙে গেছে ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ নামক স্থানের ৪০০ মিটার গ্রোয়েন বাঁধ।নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ৪শ’ পরিবারের বসত ভিটা।বুধবার (২০অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই,খগাখড়িবাড়ি,গয়াবাড়ি,টেপাখড়িবাড়ি,খালিশাচাঁপানী,ঝুনাগাছ চাঁপানী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা,ডাউয়াবাড়ি,শৌলমারী ও কৈমারীসহ ১০টি ইউনিয়ন এলাকার ২২টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ।চরাঞ্চলের এসব বাড়িঘরে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি উঠেছে।পানির নিচে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট।
ডালিয়া পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সূত্রে জানা যায়,গতকাল রাতে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়ে।পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের তিস্তার দোমুহনী পয়েন্টে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
কালিগঞ্জে গ্রোয়েন বাঁধ ভাঙনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিমলা উপজেলার ১০নং পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান,তিস্তা নদীর উভয় তীরের বাঁধে কোনো সমস্যা হয়নি।গ্রোয়েন বাধঁ ভেঙ্গে যাচ্ছে।প্রায় ৪০০ পরিবারের ঘর বাড়ী তিস্তায় বিলীন হয়েছে।১হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম বলেন,আমরা মাইকিং করে ছাতুনামা,কেল্লাবাড়ী ও ভেন্ডাবাড়ি চরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছি।তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী শাসন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান,পরিস্থিতি খুবেই ভয়াবহ।তিস্তা বাজার, তেলিরবাজার,দোলাপাড়া, চরখড়িবাড়ি এলাকা তলিয়ে গেছে।চরের ফসলের জমি সব পানির নিচে।ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষজন গবাদী পশু সহ নিরাপদে সরে গেছে।খালিশা চাঁপানী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন কার্তিক মাসের এমন হঠাৎ বন্যা এলাকাবাসীকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে।এলাকার ছোটখাতা,বাইশপুকুর,সুপারীপাড়া গ্রাম এখন নদীতে পরিনত হয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন,উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।যা তিস্তা পয়েন্টে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ পানি প্রবাহ।এ জন্য আমরা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দিয়ে নদীর পানি প্রবাহ অব্যাহত রেখেছি।