সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অবাস্তব হলেও বাস্তবে জলাবদ্ধতার কারনে গত ৫ বছর ধরে আমন ধানের চাষ হয় না। উপজেলার পৌর সভার কিছু অংশ ও কয়েকটি গ্রামে অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও রাস্তার পাশের খাল ভরাট করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমির আমন ধান চাষ করা কোন দিন সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছে এলাকার কৃষক পেশার জনগন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের তাড়াশ সদরের দক্ষিন ও পুর্ব মাঠ, মাধবপুর, মথুরাপুর, বোয়ালিয়া, ও সরাপপুর গ্রামের মাঠে ধানি জমিতে গত ৫ বছর ধরে অপরিকল্পিত শতাধিক পুকুর খনন আর গ্রামের আঞ্চলিক রাস্তার পাশে খাল ভরাট করা হয়েছে। মাঠের ভিতরে অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও খাল ভরাট করায় বৃষ্টি ও বন্যার পানি বের হতে না পেরে অনেক গুলো গ্রামের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে । মাঠের পানি জমে থাকায় এ বছরও কৃষকরা রবি শস্যের আবাদ করতে পারে নি । সেই সাথে ইরি ধান চাষ না করার সম্ভবনা রয়েছে।
তাড়াশ উপজেলা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক সোলায়মান হোসেন জানান, গত ২ বছর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসার এর নিকট আমরা কয়েক গ্রামের অধিক কৃষক লিখিত অভিযোগ করে এর কোন সমাধান পাইনি। তিনি আর ও বলেন, আমরা কৃষক মানুষ কৃষি আবাদই আমাদের বেচে থাকার অবলম্বন। সেই আবাদ যদি না করতে পারি আমরা বাচব কি খেয়ে।
বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী ও মীর শহিদুল ইসলাম জানান, অদ্যাবধি পর্যন্ত খাল ভরাট ও পুকুর খননের কাজ বন্ধ হয়নি । আমাদের গ্রামসহ এই এলাকার কয়েকটি গ্রামের মাঠে পানি প্রবাহের খাল গুলো ভরাট করায় মাঠে জলাবদ্ধতায় আমরা ৫ বছর ধরে আমনের আবাদ সহ অন্যান্য আবাদ করতে পারছি না । এই বিষয় নিয়ে গত বছর জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য আন্দোলনের সুত্রপাত হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্যালো মেশিন লাগিয়ে পানি সেচে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছিল এ বছর কি হবে জানিনা।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন ,প্রতি বছর অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও খাল ভরাট ও পানি প্রবাহের ব্রীজের মুখ বন্ধ করার কারনে জলাবদ্ধতায় আমন ধানসহ অন্যান্য আবাদ কমে গেছে । এ সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে খাল কেটে দিয়েছি ও পানি শুকানোর ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যক্তি নিজের স্বার্থে সরকারী নিষেদ অমান্য করে অত্যাধিক হারে খাল ভরাট ও পুকুর খনন করছে। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ কমে গেছে ।