একটা সময় ছিলো যখন কেউ চিনতোনা বাঁধটি।হঠাৎ করেই যেন পরিবর্তন হয়ে গেলো সেই চিত্র।বাঁধটিতে বেড়েছে মানুষের পদচারণা।এমনি একটি বাঁধ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে।পানির স্রোতে আনন্দিত হয়ে দর্শণার্থীরা এ বাঁধটির নাম দিয়েছে মিনি কক্সবাজার।শনিবার(১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কুমারপুর গ্রামে ভূল্লী বাঁধে গেলে এমনি দৃশ্যটি চোখে পড়ে।
দিনের পর দিন বেড়েই চলছে এই বাঁধে উপচে পড়া দর্শনার্থীদের ভিড়।বর্ষা মওসুমে ভুল্লী বাঁধটি এক নজর দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসে ভিড় জমায়।তবে এই বাঁধে যাবার রাস্তাটি দ্রুত সময়ে সংস্কার করা ও ভুল্লী নদীর এ বাঁধ এলাকাটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন বাঁধে ঘুরতে আসা বিনোদনপ্রেমিরা।
সারেজমিনে গিয়ে যানা যায়,সেচ ব্যবস্থার জন্য ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে ভুল্লী বাঁধ নির্মাণ করা হয়।বর্ষা মওসুমে এ বাঁধে পানি ধরে রাখা হয়।পরে খড়া মওসুমে সে পানি আশপাশের কৃষকরা তাদের ফসলী জমিতে ব্যবহার করেন।এছাড়াও জেলেরা এ বাঁধে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।বাঁধটিতে রয়েছে ১০টি জল কপাট।
জলধারা প্রবাহের জন্য বাঁধটিতে কয়েকটি ধাপে স্তর রয়েছে।এসব স্থর বেয়ে জলরাশি চলাচল করে প্রতিনিয়ত।জলধারা প্রবাহের সময় যে শব্দ সঞ্চার হয় চারিদিকে তা ঠিক সমুদ্রের গর্জনের মতই।যা মানুষের মন কেড়ে নেয়।বাঁধে পরিবারসহ ঘুরতে এসে আনন্দে মেতে উছেন সকলেই।তবে বাঁধটিতে যাবার রাস্তাটি বর্ষ মৌসুমে কাদা লেগে থাকায় অনেকেরই যাতাযাতের সময় পড়েছে বিপদে।
একদিকে যেমন দূর দূরান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা অপরদিকে সেই বাঁধে মাছ স্বীকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্থানীয় অনেক জেলেই।বাঁধে বন্ধুদের সহ ঘুড়তে এসেছেন ইসমাইল হোসেন সহ তার বন্ধুরা।তিনি বলেন,অনেকের মুখে শুনেছি এই বাঁধারে কথা।আজ আসলাম বন্ধুদের সাথে।অনেক মজা করলাম।তবে এখানে কোন বসার ব্যবস্থা নেই।জেলার আকর্ষণীয় একটা স্থান। টাকে যদি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হয় তাহলে দর্শনার্থীদের জন্য অনেক ভালো হবে।
বাঁধের রাস্তা দিয়ে বাঁধের দিকে যাচ্ছেন মনির হোসেন নামের এক দর্শনার্থী।তিনি বলেন,যাচ্ছিলাম বাঁধের দিকে তার আগেই কাদায় কাপড় নষ্ট হয়ে গেলো।রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় কাদায় ভরা এখানে মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকে যাচ্ছেন,কেউবা অটোতে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।তাই এটাকে দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
পরিবার সহ বাঁধে ঘুড়তে এসেছেন আম্বিয়া খাতুন নামের এক দর্শনার্থী।তিনি বলেন,লকডাউন খোলার পরে এখানে আজ প্রথম আসলাম পরিবারসহ।এখানে অনেক ছেলেরাই নেমে গোসল করছেন।যেখানে মেয়েদের নেমে একটু পানি ছুয়ে আনন্দ করার মতো কোন ব্যবস্থা নেই।এখানে মেয়ের জন্য নিরাপত্তার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই।যদি এখানে কোন গ্রাম্য পুলিশ রাখা হয় তাহলে ভালো হতো।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,গতবছর আমরা সেই বাঁধে গিয়ে বেশ কিছু ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছিলাম।সেখানে যেসব দর্শনার্থীরা আসে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সেখানে একটি স্বেচ্ছাসেবকী টিম করে দিয়েছি।এছাড়াও এটাকে একটি পর্যটন স্থান হিসাবে সেটা গড়ে তুলতে পারি সেটার একটা সিদ্ধান্ত গহন করা হয়েছে।