ঠাকুরগাঁওয়ে পানির নিচে তলিয়ে গেছে আগাম আলু চাষিদের সপ্ন।টানা ২ দিন বৃষ্টির কারনে ডুবে গেছে আগাম আলু রোপণকৃত জমিগুলো।চাষিরা বলছেন গত এক সপ্তাহর মধ্যে যারা আলুর বীজ রোপণ করেছিল তারা বেশ ক্ষতির আশংঙ্খায় রয়েছে।সদর উপজেলার আকচা এলার আলু ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়,আগম রোপণকৃত আলুর সবগুলো ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।প্রতিটি জমিতেই চাষিরা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ডুবে যাওয়া আলু তুলতে ব্যস্ত।
যদিও এখনি জমি থেকে আলুর বীজ তুলে ফেলার প্রয়োজন মনে করছেনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।ঠাকুরগাঁও কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে,এবার ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু রোপন করা হয়েছে।দুইদিনে জেলায় বৃষ্টির পরিমান ৬৫.৬ মি.মি।জেলার প্রায় ২৫৫ হেক্টর জমি আক্রান্ত অবস্থায় আছে।
তলিয়ে যাওয়া ক্ষেত থেকে আলু তুলতে থাকা আজমতকে দেখাযায় ছেলেকে সাথে নিয়ে আলু তুলে তুলে একটি ঝুড়িতে রাখছেন।কথা হয় তার সাথে।তিনি জানান,পানির নিচে থাকলে আলু গুলো নষ্ট হয়ে যাবে।কিছুদিন আগেই রোপণ করেছিলাম।এখনই তুলতে হচ্ছে।আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলে।জানিনা কিভাবে ঋণ মহাজন শোধ করবো।পাশেই দাড়িয়ে ছিলেন মনসুর মিঞা।তিনি এবার ২ একর জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছেন।তিনি বলেন,এবারতো আলুতে অনেক লোকসান হয়েছে।তাই আগাম আলু চাষ করে কিছুটা লোকসান ঘোচানোর সপ্ন দেখেছিলাম।কিন্তু সব সপ্ন পনিতেই ডুবে গেলো।
কথা হয় আলু চাষী ফারুখ মোদীর সাথে।তিনি বলেন,প্রতিবছর আলুর মৌসুমে অধিক লাভ পাবার আশায় আমরা এ এলাকার আলু চাষীরা আগাম জাতের আলুর বীজ লাগাই।গত বুধবার সকালে ৪০ শতক জমিতে রোমানা জাতের হাইব্রিড আলুর বীজ লাগিয়েছি।কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছি।আজ জমি থেকে আলুর বীজগুলো তুলতে না পারলে আলুগুলো সব পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে।
আকচা গ্রামের আলু চাষীদের দেয়া তথ্যমতে,এ গ্রামের প্রায় ৩০ জন চাষীর প্রত্যেকেই সর্বনিম্ন ৮/১০ বিঘা জমিতে আলুর বীজ রোপন করেছেন।আলু চাষীদের মধ্যে কামাল ১৪ বিঘা,মাজেদ উদ্দিন ১২ বিঘা,সোহেল রানা ১২ বিঘা,কমেত সাকু ১২ বিঘা, জাকের হোসেন ১১ বিঘা,আলাউদ্দিন ১০ বিঘা জমিতে আলুর বীজ রোপন করেছেন।এছাড়াও জেলার অন্যান্য এলাকাতেও একই সমস্যা চোখে পড়েছে।আলু চাষী কামাল জানায়,এবার আমি ১৪ বিঘা জমিতে ৫৬ বস্তা আলুর বীজ লাগিয়েছি।খরচ পড়েছে প্রায় ৯৮ হাজার টাকা।সার,শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ খরচ প্রায় ৯৭ হাজার টাকাসহ সব মিলে শুধু আলু বীজ লাগাতেই প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।দুদিনের টানা বৃষ্টিতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।
ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হাসেন জানান,বেশি লাভের আশায় প্রতি বছরি এ জেলায় আগাম আলুর চাষ হয়।টানা দুদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে রোপনকৃত বেশ কিছু জমির বীজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।পানি নেমে গেলে এর পরিমান বের করা সম্ভব হবে।এমন অবস্থায় বৃষ্টি চলাকালীন ক্ষেত থেকে আলু না তুলে এমনিতে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।মি. হাসেন জানান,আলু গুলো তুলেও কোনো লাভ হবে না।তুলে রেখে দিলেও সেগুলো পঁচে যাবে।বৃষ্টি কমার পর অবস্থা অনুযায়ী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।