টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল রনী আহত হয়েছেন।পরে স্থানীয় লোকজন ম্যাজিস্ট্রেটকে উদ্ধার করে সেখান থেকে নিরাপদে নিয়ে যায়।মঙ্গলবার দুপুরে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক ও পরিবহন আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে হামলার শিকার হন তিনি।
এদিকে শ্রমিকদের জেল-জরিমানার ঘটনায় পরিবহন শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে এলোপাথারিভাবে গাড়ি পার্কিং করে সড়ক অবরোধ করেন।পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়,ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড ও উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ের গেটের সামনে এলোপাথারিভাবে গাড়ি পার্কিং করে দখল করার বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উঠানো হয়।
মিটিংয়ে উপস্থিত অনেকেই পরিবহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট দুই পরিবহন শ্রমিককে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ড প্রদান করেন।এতে উত্তেজিত হয়ে অন্য শ্রমিকরা মেজিস্ট্রেটের উপর হামলা চালায়।
এতে মেজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল রনীর নাক ফেটে যায়।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।এদিকে হামলার ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও শ্রমিক পরিবহন নেতাদের মধ্যে উপজেলা নির্বাহীর কার্যালয়ে ইউএনও’র কক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।পরে শ্রমিক নেতারা ইউএনও ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ভূঞাপুর বাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুরুজ মিয়া বলেন,বাসস্ট্যান্ডে ৩০ বছর যাবৎ একই জায়গায় টিকিট কাউন্টার রাখা হয়েছে।দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে সেখান থেকে টিকিট কাউন্টার সরানোর নির্দেশ দেন।পরে পরিবহন শ্রমিক ও ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।এক পর্যায়ে হারুন নামের এক বাস চালককে ম্যাজিস্ট্রেট গাড়িতে তোলেন।পরে অন্যান্য শ্রমিকরা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে।
সন্ধ্যায় ইউএনও অফিসে বৈঠকে বসে মেজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল রনীর কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে।একই সঙ্গে টিকিট কাউন্টারটি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওহাব মিয়া বলেন,ইউএনও কক্ষে শ্রমিক নেতাসহ সবাই বসে বিষয়টির একটা সমাধান করা হয়েছে।পরিবহন শ্রমিকরা ক্ষমা প্রার্থণা করায় দুই শ্রমিককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হামলার শিকার ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল রনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।