টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাবেক স্ত্রী সুমি আক্তার ও তার শাশুড়ি জমেলা বেগমকে হত্যার পর শাহজালাল আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার দৈনিক কালজয়ীকে এ তথ্য জানান।
দুটি লাশের পাশেই পড়েছিল শাহজালালের নিথর দেহ। ট্রিপল মার্ডারের বিষয়টি নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দিন শেষে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন। শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে ঘাটাইল উপজেলার দিঘর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া এলাকার একটি বসতঘরে তাদের লাশ পাওয়া যায়।
নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী জয়নুদ্দিনের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৫), জয়নুদ্দিনের মা জমেলা বেগম (৫৫) এবং শাহজালাল ইসলাম সোহাগ (৩০)। শাহজালাল কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া পূর্বপাড়া এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত জয়নুদ্দিনের ছেলে শাফি (৩) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, ‘ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় আমরা রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। সাবেক স্ত্রী সুমি আক্তার ও সুমির বর্তমান শাশুড়ি জমেলা বেগমকে হত্যার পর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেছেন।’
আরও বলেন, ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে সুমি ও শাহজালাল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। প্রায় পাঁচ মাস তারা ঘর সংসার করেন। এরপর সুমির বাবা জিন্নাত আলী তাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে সুমিকে বাড়িতে রেখে দেন। ওই সময় সুমি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে তার গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট করার শর্তে সুমির আগের স্বামী জয়নুদ্দিন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে সুমিকে আবার তার কাছে ফেরত নেন। এর কিছুদিন পর জয়নুদ্দিন আবার বিদেশে চলে যান। সন্তান নষ্ট করায় সুমির সাবেক স্বামী শাহজালাল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘সুমির স্বামী জয়নুদ্দিন বাড়িতে না থাকায় মাঝে মধ্যেই শাহজালাল সুমির শ্বশুর বাড়িতে আসতেন। ঘরের বারান্দার লোহার গ্রিলের চাবিও ছিল শাহজালালের কাছে। পরে গতরাতে শাহজালাল সুমির ঘরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে তার সাবেক স্ত্রী সুমি ও সুমির শাশুড়িকে হত্যা করেন। এ সময় সুমির শিশু সন্তানকেও হত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এরপর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেন। বিভিন্ন আলামত ঘেটে আমরা বিষয়টির রহস্য উৎঘাটন করতে পেরেছি। তারপরও ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’