ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি ‘অভিযান’ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এদের বেশির ভাগ কেবিনের যাত্রী বলে দমকল বাহিনী সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এমভি অভিযান লঞ্চটি গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার সদরঘাট থেকে সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠি সংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে ইঞ্জিন রুম থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে।
মুহূর্তে তা লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বেশির ভাগ যাত্রী ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। রুহুল নামের এক যাত্রী জানান, রাত তিনটার দিকে ইঞ্জিন রুমে বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে। মুহূর্তে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। লঞ্চের দোতলা ও তিনতলায় কেবিনের প্রবেশপথ লঞ্চ যাত্রা শুরুর পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয়। নিচের যাত্রীরা নদীতে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচালেও কেবিনের যাত্রীরা বের হতে পারেননি। অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ঝালকাঠি বরিশাল থেকে ১৬টি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ছুটে আসে। তবে সকাল নটা পর্যন্ত লঞ্চে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, লঞ্চে অগ্নিকান্ডে ঘটনায় নিহতের
সংখ্যা অনেক বেশি।
ঝালকাঠী দমকল বাহিনীর স্টেশন মাস্টার শহীদুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০০ জন যাত্রী। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনিও আশংকা প্রকাশ করেন। শুক্রবার ভোর ৪টায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার লঞ্চ টার্মিনালে শত শত স্বজনদের আহাজারি গুনতে পাওয়া যায়। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জহুর আলী জানিয়েছেন, শতাধিক যাত্রী ঝালকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ আহত যাত্রীকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।
রুনু বেগম নামের এক যাত্রী বলেন, জীবন বাঁচাতে পারবো কি-না জানি না। পুরো লঞ্চে আগুন জ্বলছে। ছোট বাচ্চা নিয়ে কি করবো জানি না। আমাদের বাঁচাও। এই বলে তিনি কেঁদে ফেলেন ও ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভোর সাড়ের চারটায় রাজারহাট-বি নামের আর একটি লঞ্চ বেতাগী লঞ্চঘাটে এসে পৌঁছালে ওই লঞ্চের যাত্রীরা জানান, দূর থেকে দেখেছি লঞ্চটিতে আগুন জ্বলছে। এ ব্যাপারে অভিযান-১০ লঞ্চের ইনচার্জ কামরুল হাসানকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।