ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড় দেওয়ানপাড়ার গ্রামের মো. আলালউদ্দিন জুরুর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ।গতকাল(১জুলাই) শুক্রবার বিকালে ৫ টার দিকে সরাইল বড় দেওয়ানপাড়া তার নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মো. আলালউদ্দিন জুরুর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলালউদ্দিন জুরুর স্ত্রী শিউলি আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আশা নামের এক মহিলা আজ থেকে চার বছর আগে জায়গা নিয়ে আমার স্বামীর নামে আদালতে মামলা করে। উচালিয়াপাড়া ও নিজ সরাইলের মধ্যবর্তী গোয়াইল পুকুর নামে পরিচিত।গোয়াইল পূকুর আমার স্বামী দীর্ঘ ২৫ বৎসর যাবত ক্রয় সূত্রে মালিক। আজ থেকে প্রায় ৬০ বৎসর পুর্বে আশা বেগমের দাদা ক্রয় করে মালিক হন। এই সূত্র ধরে আসা বেগমের বাবা-চাচারা মালিক হন। এরপর আশা বেগমের বাবা তার চাচার কাছে জায়গা বিক্রি করে। আশা বেগমের চাচারা আবার অন্যদের কাছে বিক্রি করে। পরবর্তীতে আমার স্বামী ক্রয় সূত্রে মালিক হন।
২৫ বৎসর ধরে আমার স্বামী এই জায়গাতে কয়েকটা ঘর তুলে,আছে গাছ গাছালি ও বড় পুকুরে মাছ চাষ আবাদ করে আসছে।এইগুলোর দেখাশোনা করে আমাদের ভাতিজা রফিক। প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই আমার স্বামীর কাছে এই ক্রয় করার জায়গার সব দলিলপত্র আছে। আশা বেগম হঠাৎ করে দাবী করে এই জায়গায় তার জায়গা আছে, বলে আশা বেগম মামলাও করে। এই নিয়ে সরাইল ভূমি অফিসে ভূমি কর্মকর্তা আশাকে তলব করে। তার উপযুক্ত কাগজপত্র না থাকাই এসিল্যান্ড মহোদয়ের ডাকেও সাড়া দেয়নি। আশা বেগমের পূর্বের দায়ের করা মামলা বিজ্ঞ আদালতে খারিজ করে দেয়।
আশা বেগম এখন অন্য কোন পথ না পেয়ে একের পর এক বিভিন্ন অজুহাতে আমার স্বামীর নামে কয়েকটি মিথ্যা মামলা করে। আশা বেগমের মিথ্যা ধর্ষণ মামলা আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হলে,আদালত আমার স্বামীর পক্ষে রায় দেয়।এর মাঝে আরও ছয়টি মিথ্যা মামলা চলমান রয়েছে। এদিকে নিজ সরাইল গ্রামের আশা বেগম দাবী করেন,আলাউদ্দিন জুরুর সঙ্গে জায়গা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। জুরু বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে অন্তত বিশটি মামলা দায়ের করেছে। এতে আশা বেগম মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিউলি আক্তার বলেন,গত ১৯ জুন রবিবার আশার করা মিথ্যা মামলায় আমার স্বামী হাজতে যায়। আশা বেগমের বেশিরভাগ মিথ্যা মামলা নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, আগুনে পোড়া, মারামারি ও চাঁদাবাজি এই ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে,আশা বেগমের গং তার পরিবার দ্বারা আমরা সামাজিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।এইগুলা করেও আশা বেগম থামেনি। গত মাসের ১৫ জুন আমার স্বামী আলালউদ্দিন জুরু আমার ছেলে শিহাব ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার পথে বিশ্বরোড় চৌরাস্তায় গেলে, আশা বেগম গুন্ডা মাস্তান সহ আমার স্বামী ও ছেলেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মোবাইল ও দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং আমাদের উল্টা মিথ্যা মামলা দেয়।
এরপরও আশা বেগম শান্ত হয়নি।এর কয়েকদিন পর ২০ জুন সোমবার রাতে আশা বেগমের মেয়ের জামাই কারেন্টে লেগে মারা যায়। আমরা সবাই শুনতে পাই। আশা বেগম এর দু’দিন পরই আমার স্বামীর ছেলে ও ভাতিজা দের নামে মিথ্যা খুনের মামলা করেছে। আপনারাই বলেন, আমার স্বামী জেলে থাকা অবস্থায় ওর মেয়ের জামাইকে কিভাবে মারতে পারে, আমার স্বামী তো এখনও জেলে। আশা বেগম যে মিথ্যা কথা বলতেছে এটাই তার প্রমান। সংবাদ সম্মেলনে শিউলি আক্তার বলেন, সত্য কোনদিন চাপা থাকেনা। আশা বেগমের মেয়ের জামাই যে কারেন্টে লেগে মারা গেছে স্থানীয় সকলেই জানে এবং তার প্রমাণ আমাদের কাছেও আছে। আপনারা চিন্তা করেন মানুষ কতটুকু নিচে নামলে মানুষ এই কাজ করতে পারে। লাশের ওপর নিজেরা হাত দিয়ে ছুরিঘাত করে আবার মিথ্যা খুনের মামলা দেয়।কত নিচে নামলে একটা মানুষ এমন মিথ্যা খুনের মামলা করতে পারে। দেশে আইন জারি করা হয় ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য।
কিন্তু আশা বেগমের মতো কিছু নারীর জন্য সেই আইন দ্বারা আমাদের মত মানুষের মান সম্মান শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিউলি আক্তার বলেন, আজ বাধ্য হয়েছি আপনাদের সামনে আসতে। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের নিকট আমাদের সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে আমার এবং আমার পরিবারের আকুল আবেদন ঘটনার সঠিক তদন্ত করে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করে শান্তিপূর্ণ জীবন চলাচলে সহযোগিতা করুন। এটা একটি ষড়যন্ত্র মামলা এই মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করছি এবং এ মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আলাউদ্দিন জরুর মাতা।